তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা-তরমুজের পুষ্টি উপাদান

ঘি খাওয়ার উপকারিতাতরমুজ শরীরের পানির চাহিদা পুরণ করে। তরমুজের প্রায় ৯২ শতাংশই পানি। তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা এবং তরমুজের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে আপনারা যারা জানতে চান। তারা আমাদের নিচের আর্টিকেলটি পরতে পাড়েন। সেখানে আমরা তুলে ধরেছি তরমুজ নিয়ে সকল বিষয় যা আপনারা জানতে চান।
অতিরিক্ত গরমের কারনে অনেকের শরীরে পানি শূন্যতার দেখা দেয়। তরমুজ খেলে শরীরের এসব সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে। তাই সকলের তরমুজ খাওয়া উচিৎ শরীরকে সুস্থ রাখতে।

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে সাড়া বাংলাদেশে যে পরিমাণে গরম বেড়েছে। তাতে করে হিটস্ট্রোকের,পানিশূন্যতার,ডায়রিয়ার,আমাশয়ের আশঙ্কা অনেক বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের সকলের উচিৎ এই গরমে ঠাণ্ডা জাতীয় খাবার খাওয়া। তরমুজ তেমনি একটি ঠাণ্ডা জাতীয় খাবার। যেটি আমাদের শরীরকে ঠাণ্ডা রাখার পাশাপাশি শরীরের পানিশূন্যতাও দূর করে।

তরমুজ খেলে কি কি উপকার হয়

  • ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় : লাইকোপেন ও কিউকারবিটাসিন ই উপাদান রয়েছে তরমুজে। গবেষণা থেকে জানা গেছে এটি ক্যান্সার নিরাময়ে ভূমিকা রাখে। তবে লাইকোপেন মলদ্বারের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে অনেকটা সাহায্য করে। তরমুজের কিউকারবিটাসিন শরীরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে। টিউমারের বৃদ্ধি রোধ করে। তরমুজ খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
  • পানির চাহিদা মেটায় : শরীরকে ঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে পানির অনেক প্রয়োজন রয়েছে আমাদের শরীরে। শরীরকে সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে হলে পানির কোন বিকল্প নেই। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যক্রম গুলো ঠিক থাকে পানির কারনে। তরমুজের প্রায় ৯২ শতাংশ পানি রয়েছে যা শরীরের পানির চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখে। তরমুজে প্রচুর পানি রয়েছে যেটি আমাদের শরীরের পানির যোগান দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তরমুজ শরীরের পানির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।
  • ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে : তরমুজে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এই ভিটামিন গুলো আমাদের ত্বককে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ত্বককে মসৃণ রাখতে এবং চুলের গোড়াকে শক্ত করতে ভিটামিন সি ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে ভিটামিন এ ত্বকে নতুন কোষ গঠনে এবং কোষের ক্ষতিপূরণে ভূমিকা রাখে। ত্বক শরিরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ যেটিকে সুস্থ এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করে তরমুজ।
  • হজমে সহায়তা করে : শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে পানি পান। আর তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে তাই এটি হজমে সহায়তা করে। তরমুজ সমান্য পরিমাণে আশ এবং পুরোটাই পানি জাতীয় একটি ফল। যেটি হজম শক্তিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে। তরমুজের প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে যেটি আমাদের শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলোকে নিষ্কাশনে সাহায্য করে। আর তরমুজে আশ রয়েছে যেটি মলত্যাগকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এভাবেই তরমুজ হজম শক্তিকে বাড়াতে সাহায্য করে।
  • দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় : বয়সের সাথে সাথে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি লোক পায় এটি একটি সাধারণ রোগ। তরমুজে লাইপোকেন জাতীয় উপাদান রয়েছে যেটি দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। লাইপোকেন,আন্টিঅক্সিডেন্ট দৃষ্টিশক্তি লোপ পাওয়া থেকে চোখকে রক্ষা করে। তাই যাদের দৃষ্টি শক্তি লোপের ভয় রয়েছে তারা নিয়মিত তরমুজ খেতে পারেন।

তরমুজের পুষ্টি উপাদান

তরমুজ শুধু পুষ্টিকর জাতীয় একটি খাবার এমনটি নয়। এটি আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে। তরমুজ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল। তরমুজের ভিটামিন এ,ভিটামিন সি,পটাশিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,বি ১,বি ২,বি ৬ সহ আরো অনেক পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। তরমুজে ৯২ শতাংশ পানি রয়েছে তাই এটি আমাদের শরীরের ডিহাইড্রেশন দূর করতে সাহায্য করে। তরমুজের পুষ্টিগুণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এটি আমাদের শরীরের পানি শূন্যতা দূর করে। 

তরমুজে সামান্য পরিমাণ কালোরি রয়েছে এবং আন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যেটি আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যেটি হৃদরোগের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে ভূমিকা রাখে। ত্বককে সুস্থ রাখতে মাংসপেশিকে সুস্থ রাখতে,স্ট্রোকের সমস্যা দূর করতে এবং হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তরমুজের বিকল্প নেই। পরিশেষে বলা যায় তরমুজ একটি খুবই উপকারী ফল যেটি আমাদের শরীরকে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান দিয়ে সাহায্য করে।

খালি পেটে কি তরমুজ খাওয়া উচিত

তরমুজ গ্রীষ্মকালীন একটি ফল। তরমুজে প্রায় ৯২ শতাংশ পানির উপস্থিতি রয়েছে। তরমুজে পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,ভিটামিন এ,ভিটামিন সি রয়েছে। যদি আমাদের চুল পড়া,মাংসপেশী সুস্থ রাখার কাজ করে থাকে। এটিতে লাইপোকেন,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যেটি আমাদের শরীরকে ক্যান্সারের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। 
তরমুজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল এটি আমাদের শরীরের পানিশূন্যতাকে দূর করে। তরমুজ খালি পেটে খাওয়া যাবে। তরমুজ এমন একটি ফল যেটি যেকোনো সময় খাওয়া যায়। সকালে খালি পেটে তরমুজ খেলে আন্টি অক্সিডেন্ট থাকায় পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে এবং হজমে সাহায্য করে।

দিনে কতটুকু তরমুজ খাওয়া উচিত

তরমুজে কালোটির পরিমাণ অনেক কম। প্রতি ১০০ গ্রামে ১৭ গ্রাম ক্যালরি পাওয়া যায়। তাই অনেক পরিমান তরমুজ খেলেও মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এছাড়াও তরমুজে পটাশিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,ভিটামিন এ,ভিটামিন সি,বি ২,বি ১,বি ৬ সহ আরো অনেক পুষ্টি জাতীয় উপাদান রয়েছে। প্রতিদিন আমাদের প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম তরমুজ খাওয়া উচিত। 

তরমুজ আমাদের শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করে। তরমুজ খেলে আমাদের শরীরের যে বর্জ্য রয়েছে সেটি সহজে বেরিয়ে আসে। এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। তরমুজে সুগারে না থাকায় তরমুজ অনেক বেশি খেলেও সেটি আমাদের শরীরের উপর কোন প্রভাব ফেলে না। এবং মোটা হতেও সাহায্য করে না। তাই দিনে যতটুকু সম্ভব তরমুজ খাওয়া যেতে পারে।

তরমুজ খেলে কি কি ক্ষতি হয়

  • উপরের আলোচনা গুলো থেকে আমরা জেনে এসেছি তরমুজে কি কি উপাদান রয়েছে পুষ্টি জাতীয়। তরমুজ তার বিভিন্ন পুষ্টি জাতীয় উপাদানের মাধ্যমে আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে থাকে। ৯২ শতাংশ পানির উপস্থিতি রয়েছে যেটি আমাদের শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। এখন আমরা জানবো অতিরিক্ত তরমুজ খেলে আমাদের শরীরের কি কি ক্ষতি হতে পারে।
  • যেকোনো রকম ফলমূল খেতে হবে শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী। তরমুজও এটির ব্যতিক্রম নয়। চিকিৎসকেরা বলেন যেহেতু তরমুজ একটি ফাইবার জাতীয় খাবার। যদি কেউ তরমুজ অতিমাত্রায় খেয়ে ফেলে তবে তার ডায়েরিয়ার মত বিপদজনক রোগ হতে পারে।
  • অনেক সময় অতিরিক্ত তরমুজ খেলে বদ হজম হয়। এটির মূল কারণ হলো তরমুজে সরবিটল নামক একটি উপাদান রয়েছে। যার ফলে অতিরিক্ত তরমুজ খেলে বদহজম হয়।
  • তরমুজে লাইপোকিন নামক উপাদান রয়েছে। যেটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কেউ যদি এই অতিরিক্ত আন্টিঅক্সিডেন্ট তার শরীরে প্রবেশ করায়। তবে তার পেটে বিভিন্ন রকম সমস্যা হতে পারে। যার ফলে হজমের অনেক রকম সমস্যা হয়।
  • তরমুজে শর্করার পরিমাণ সামান্য হলেও। যদি কেউ অতিমাত্রায় তরমুজ খেয়ে থাকে তাহলে তার শরীরে আর শর্করার পরিমাণও অনেক বেড়ে যায়। যার ফলে অতিরিক্ত তরমুজ খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়ে।
  • তরমুজের প্রায় ৯২ শতাংশই পানি। তরমুজ আমাদের শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে। তবে অতিরিক্ত তরমুজ খেলে শরীরে পানির পরিমাণও অনেক বেড়ে যায়। ফলে অতিরিক্ত পানি খাওয়ার ফলে ওভার হাইড্রেশন হয়ে যেতে পারে। এর ফলে কিডনির অনেক বড় সমস্যা দেখা দেই।

শেষ কথা

শরীরে তরমুজের অনেক প্রয়োজন আছে। এটি বিভিন্ন ভাবে আমাদের সরিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আর আপনাদের যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহলে আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এবং কমেন্টের মাধ্যমে আপনাদের মতামত জানতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন

comment url