খেজুর খাওয়ার উপকারিত-খেজুর ভিজে খেলে কি উপকার হয়
ভোট্টা খাওয়ার উপকারিতাখেজুর খাওয়া আমাদের জন্য সুন্নত। কেননা হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রিয় খাবার
গুলুর মধ্যে খেজুর অন্যতম ছিল। তাই আমাদের জন্য খেজুর খাওয়া সুন্নত। খেজুরে অনেক
পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেটি আমাদের শরীরের বিশেষভাবে উপকার করে। আমরা নিচে আলোচনা
করেছি খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা চাইলে এটি পড়ে আসতে
পারেন।
খেজুর আরবদের প্রধান খাবার হলেও আমাদের দেশেও খেজুরের জনপ্রিয়তা অনেক। দেশের অনেক
স্থানেই এখন আরবিয় খেজুরের চাষ হচ্ছে। খেজুর নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি নিচের এই
আর্টিকেলটিতে।
ভূমিকা
খেজুর বহুগুণ সম্পূর্ণ একটি কার্যকরী ফল। আমরা সকলেই রোজা আসলে অনেক বেশি খেজুর
খেয়ে থাকি। তবে আমাদের সকলেরই উচিত শুধু রোজাতে নয় সারা বছরেই খেজুর খাওয়া। এতে
আমাদের শরীরের অনেক ভিটামিনের অভাব পূরণ হবে। তবে আমাদের সকলকেই খেজুর পরিমিত
খেতে হবে। তা না হলে খেজুর বেশি খাওয়ার কারণে শরীরে অনেক রোগের জন্ম নিতে পারে।
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
- খেজুর অনেক শক্তিশালী একটি ফল। খেজুরে অনেক ধরনের ভিটামিন রয়েছে। যারা ইফতারে শর্বদের পরিবর্তে খেজুর খায়। তারা শরীরে শর্বদের তুলনায় অনেক বেশি শক্তি পায়।
- খেজুর আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালনকে ভালো রাখে। নিয়মিত খেজুর খেলে হৃদপিণ্ড ভালো থাকে।
- খেজুর আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে এবং আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- আমাদের শরীরে শরকরার ঘাটতি অনেক থাকে। খেজুর খেলে শরীরের সেসব শর্করার ঘাটতি পূরণ হয়।
- সারাদিন রোজা থাকার কারণে আমাদের শরীর অনেক ক্লান্ত হয়ে পরে। ফলে ক্ষুধার পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। খেজুর আমাদের শরীরের ক্ষুধার পরিমানকে কমিয়ে দেই।
- খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। যেগুলো আমাদের হারকে মজবুত এবং শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে।
- খেজুরে অনেক পটাশিয়াম ও সোডিয়াম রয়েছে। তাই খেজুর খেলে শরীরের ডি-হাইড্রেশন রোধ হয়।
- খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যেগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
- খেজুর একটি আশ জাতীয় খাবার। আর আশ জাতীয় খাবার আমাদের শরীরে কোষ্ঠকাঠি রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খেজুর খেলে যেসব রোগ থেকে মুক্তি মেলে
খেজুর অনেক ধরনের ভিটামিনের সমষ্টিযুক্ত একটি ফল। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি খেজুরের চাষ হয় সৌদি আরবে। খেজুর এমন একটি ফল যেটি খেলে আমাদের অনেক ধরনের রোগ-বালাই থেকে মুক্তি মিলে। নিচে খেজুর খেলে যে সকল রোগ থেকে মুক্তি মিলে সেগুলো বর্ণনা করা হলো।- খেজুর একটি আশ জাতীয় খাবার। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে আশ জাতীয় খাবার ক্যান্সারের নিরাময় হিসেবে কাজ করে। তাই খেজুর খেলে ক্যান্সার থেকে মুক্তি মিলার সম্ভাবনা অনেক বাড়ে।
- খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি মানুষের শরীরের শরকরার যেসব ঘাটতি রয়েছে সেটি পূরণ করে।
- যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। খেজুর খেলে শরীরের এনার্জি বৃদ্ধি পায়। শরীরের দুর্বলতা দূর হয়।
- নিয়মিত খেজুর খেলে যাদের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা রয়েছে সেটি থেকে মুক্তি মিলে।
- খেজুরে রয়েছে সোডিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম যেটি আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা যদি নিয়মিত খেজুর খায় তাহলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
- খেজুর খেলে ত্বকের বার্ধক্যতা দূর হয়। শরীরের এলার্জি থেকে মুক্তি মেলে এবং যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে। তাদের হার্ট জাতীয় সকল সমস্যা থেকেই মুক্তি মিলে।
খেজুর খেলে যে সকল রোগ থেকে মুক্তি পেলে সেগুলো উপরিক্ত আলোচনায় তুলে ধরা
হয়েছে। তাছাড়া খেজুর খেলে আরো অনেক ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে থাকে।
খেজুর ভিজে খেলে কি উপকার হয়
খেজুরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে যেগুলোর মধ্যে ভিটামিন এ,ভিটামিন
বি,ভিটামিন কে,প্রোটিন,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,মান্গানিস,সালফার অন্যতম। এগুলো
প্রত্যেকটি ভিটামিনের আলাদা আলাদা কার্যক্রম রয়েছে। খেজুরে ফ্রাইটিক এসিড থাকে
যেটি পানিতে ভিজিয়ে রাখলে দূর হয়। এছাড়াও খেজুর পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাইলে
সেটি খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়।
আরও পড়ুনঃ ডিম খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত খেজুর ভিজে খেতে পারেন এসব সমস্যা থেকে
মুক্তি পেতে হলে। খেজুরে ফাইবারের পরিমাণ থাকায় এটি আমাদের ক্ষুধা না লাগাতে
সাহায্য করে। এতে করে আমাদের অনেক কম খাবার খেতে হয়। যারা ওজন কমাতে চান তারা
নিয়মিত খেজুর ভিজে খেতে পারেন কারণ খেজুর ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও সকালে
খালি পেটে ভেজা খেজুর খেলে নিজেকে সারাদিন অনেক সতেজ অনুভব হয়।
শুকনো খেজুর কেন খাওয়া উচিত
খেজুর একটি ভিটামিন জাতীয় খাবার। খেজুরে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে। খেজুর
আমরা সকলেই কমবেশি খেয়ে থাকি। তবে আমরা অনেকেই আজও জানিনা শুকনা খেজুরের কি কি
উপকার রয়েছে। শুকনা খেজুরে অনেক ধরনের ভিটামিন এবং মিনারেল থাকায় এটি আমাদের
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক বৃদ্ধি করে।
খেজুরি অনেক ক্যালসিয়াম রয়েছে যেগুলো আমাদের মাড়ির দাঁতকে এবং হারকে মজবুত ও
শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখে। আমাদের শরীরে চিনির বিকল্প হিসেবে খেজুর
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি শরীরের আয়নের ঘাটতি পূরণ করে। এছাড়াও খেজুর খেলে
আমাদের শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ,শরীরের হিমোগ্লোবিনের
মাত্রা বৃদ্ধি ইত্যাদি সহ আরো অনেক উপকার করে। আমাদের সকলেরই শুকনা খেজুর খাওয়া
উচিত পরিমিত।
প্রতিদিন কয়টি খেজুর খাওয়া উচিত
খেজুর একটি পুষ্টি জাতীয় খাবার এটি আমরা সকলেই জানি। রমজান মাস আসলে খেজুর
খাবারের প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেক বেড়ে যায়। এ সময় সকলেই কমবেশি খেজুর খেয়ে
থাকে। খেজুর ফাইবার সমৃদ্ধ একটি ফল এবং প্রোটিনের পরিমাণ অনেক কম হওয়ায়। এটি অনেক
বেশি পরিমাণে খেলেও আমাদের শরীরের উপর কোন প্রভাব পড়ে না। খেজুর ওজন কমাতে
সাহায্য করে।
খেজুরে খুব বেশি প্রোটিন না থাকায় এটি অনেক বেশি পরিমাণে খাওয়া যায়। তবে যে
কোন খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। একজন সুস্থ
মানুষ দিনে চার থেকে পাঁচটি খেজুর খেতে পারবেন। খেজুরের অনেক উপকারিতা রয়েছে তাই
বলে খেজুর যখন তখন খাওয়া উচিত নয়। ফলে আমাদের শরীরের উপর এটির খারাপ প্রভাব
পড়তে পারে।
খেজুর খাওয়ার অপকারিতা
খেজুর অনেক উপকারী ফল হলেও এটি আমাদের শরীরে অনেক খারাপ প্রভাব ফেলে যখন এটি আমরা
মাত্রাতিরিক্ত খেয়ে ফেলি। খেজুর একটি মিষ্টি জাতীয় ফল। খেজুরে ফাইবার এবং
প্রোটিনের পরিমাণ অনেক কম হলেও যদি কেউ খেজুর অতিরিক্ত খায়। তাহলে তার ওজন খুব
তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে। যদি কেউ অতিরিক্ত খেজুর খায় তাহলে তার ত্বকে বিভিন্ন
সমস্যার সৃষ্টি হয়।
যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে চিকিৎসকেরা তাদের খেজুর খেতে মানা করে। কারণ
খেজুর শ্বাসকষ্টের অনেক সমস্যা বাড়ায়। উপরিউক্ত কারণগুলো ছাড়াও আরো অনেক কারণ
রয়েছে যেগুলোর কারণে খেজুর কম খাওয়া উচিত। যে কোন খাবারে পরিণত খাওয়া উচিত
অতিরিক্ত খেলে সেটি শরীরের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।
শেষ কথা
খেজুরে অনেক ভিটামিন থাকে যেগুলু আমাদের শরীরের জন্য অনেক কার্যকরী। তাই সকলেরই
খেজুর খাওয়া উচিত। আপনাদের যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লেগে থাকে তাহলে আমার
ওয়েবসাইটি ঘুরে আসতে পাড়েন। আপনারা চাইলে আপনাদের মতামত জানাতে পারেন কমেন্ট করে।
আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন
comment url