বেল খাওয়ার উপকারিতা-বেল খেলে কি ডায়বেটিস বাড়ে

খেজুর খাওয়ার উপকারিতবেল অনেক ভারি এবং পুষ্টি জাতীয় একটি ফল। আমারা সকলেই বেল খেতে অনেক পছন্দ করি। বিশেষ করে গরমের সময় এটি অনেক খাওয়া হয়। কারন তখন আমাদের শরীরে অনেক ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়। যেটি বেল খেলে অনেকটাই পুরন হয়। যারা বেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তারা আমদের নিচের এই আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।
বেল অনেক ভাবেই খাওয়া যায়। যেগুলুর মধ্যে মানুষ বেলের শরবতই বেশিরভাগ বানিয়ে খায়। বেল অনেক পুষ্টিকর আমাদের শরীরের জন্য। তাই যখন বেলের মৌসুম আসবে আমাদের সকলেরই বেল খাওয়া উচিৎ।

ভূমিকা

বেল একটি আঁশ জাতীয় ফল। আঁশ জাতীয় হওয়াই এটি পেটের অনেক সমস্যা থেকে আমাদের মুক্তি দিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। বেল শরীরের প্রোটিনের অভাব পূরণে সাহায্য করে। বেলের শরবত আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রচুর খেয়ে থাকি। আপনারাও চাইলে গরমে নিজেদের শরীরের ঘারতি গুলু পূরণ করতে বেলের শরবত বানিয়ে খেতে পারেন।

বেল খাওয়ার উপকারিতাসমূহ

  • ডায়রিয়ার সমস্যা নিরাময়ে কার্যকরী : কাঁচা বেল হজমে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে। পাকা বেল ডায়রিয়া প্রতিরোধে কাজ করে। কাঁচা বেল পেটের পক্ষে বেশি ভালো বিশেষজ্ঞরা এটিই বলেন। পাকা বেলে ডায়রিয়া প্রতিরোধের নিয়ামক রয়েছে। কারো ডায়রিয়া হলে পাকা বেল বেশি করে খাওয়ানো উচিত।
  • আলসারের সমস্যা কমায় : আলসারের সমস্যা মূলত পেটের সমস্যা। যাদের আলসারের সমস্যা রয়েছে তাদের নিয়মিত বেলের শরবত করে খাওয়ানো উচিত। পাকা বেলের আঁশে রয়েছে ফাইবার যেটি আলসার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। যদি কেউ নিয়মিত বেলের শরবত খেতে পারে তাহলে তার পেটের সমস্যা খুব কম হবে।
  • হজমের সমস্যা দূর করে : যারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত বেল খেতে পারেন। কারণ বেল হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। বেলে হজমের সমস্যাকে নিরাময় করার মত উপাদান রয়েছে। তাই এটি খেলে হজমের সমস্যা খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়। কাঁচা বেল হজমে বেশি সাহায্য করে তাই যাদের সমস্যা রয়েছে হজমে তারা কাঁচা বেল খেতে পারেন।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা কমায় : শরীরে যে সকল জটিল সমস্যা রয়েছে সেগুলোর মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য অন্যতম। বেলে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের উপাদান রয়েছে। তাই যদি আপনার পেটের সমস্যা হয়ে থাকে অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ হয়। তাহলে আপনি নিয়মিত বেল খেতে পারেন এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে।
  • ডায়াবেটিসের জন্য উপকার : বেলে মেথানল রয়েছে এটা রক্তের সুগারকে নিয়ন্ত্রণ করে। যেটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে বেল তাদের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। বেল শরীরের অতি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে।

বেলের শরবত কেন খাওয়া উচিৎ

প্রচন্ড গরমে এক গ্লাস বেলের শরবত আমাদের শরীরের অনেকটা উপকার করে। এটি আমাদের শরীরকে ঠান্ডার পাশাপাশি মনকেও চাঙ্গা করতে সাহায্য করে। প্রচন্ড গরমে অন্যান্য শরবতের তুলনায় বেলের শরবত অনেক বেশি কার্যকরী শরীরের জন্য। বেলের শরবত আমাদের শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। 
বেলে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি থাকায় শরীরের খনিজের ঘাটতিগুলু পূরণ করে। বেলে যেহেতু ভিটামিন সি রয়েছে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বেল খেলে হজমের সমস্যা দূর হয় কেননা বেল একটি আশ জাতীয় খাবার। বেল আশ জাতীয় হওয়ায় পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যা দূর করে। 
যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে সেটিও দূর হয়। বেলের শরবত খেলে আমাদের শরীরের পানির ঘাটতিগুলো পূরণ হয়। পেটের যেকোন সমস্যা দূর করতে হলে নিয়মিত বেলের শরবত খাওয়া উচিত।

বেল খাওয়ার সঠিক সময়

বেলের উপকার পেতে হলে বেল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনার প্রথমে জানতে হবে। আপনি যদি বেলের উপকার পরিপূর্ণভাবে পেতে চান। তাহলে কিভাবে বেল খেতে হয়,কখন বেল খেতে হয় এটি সম্পর্কে প্রথমে জানতে হবে। যদি আপনি বেল খাওয়ার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে না জানতে পারেন তাহলে বেলের উপকার আপনি পাবেন না। 
নিচে আমরা বেল খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। মূলত বেল একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। গরমই বেল খাওয়ার সঠিক সময় কেননা অতিরিক্ত গরমে মানুষের জীবন অনেক অতিষ্ঠ হয়ে যায়। বেলের শরবত খেলে এটি আমাদের মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখে এবং আমাদের শরীরকে ও অনেক ঠান্ডা রাখে। ফলে আমরা আমাদের কাজে প্রাণ ফিরে পাই। 
তাই গরমের সময় বেলের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এছাড়া আপনি যদি শীতকালে বেলের শরবত করে খান। হিতে আপনার বিপরীত হতে পারে। আপনার সর্দি অথবা জ্বর হয়ে যেতে পারে। কেননা বেল শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তাই আমাদের শীতকালে বেল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

বেল খেলে কি ওজন বাড়ে

বেল একটি খুবই পুষ্টিকর এবং আঁশ জাতীয় খাবার। বেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি রয়েছে। বেল আমাদের পাকস্থলীকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া বেলের শরবত খেলে শরীরে অনেক পুষ্টির জোগান পাওয়া যায়। এছাড়া বেলের শরবত আমাদের শরীরের বর্জ্যগুলু পানির দ্বারা বের হতে সাহায্য করে।
ফলে আমাদের শরীর অনেক হালকা হয়। এছাড়া বেলে আরো রয়েছে টানিন,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,প্রোটিন,ফসফরাস আয়রনের মত উপাদান যেগুলো আমাদের শরীরের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। তাই বলা যায় বেল আমাদের শরীরের ওজন বাড়াতে নয়। আমাদের শরীরের ঘারতি পূরণে বেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বেল খেলে কি ডায়বেটিস বাড়ে

ডায়াবেটিস এখন একটি খুবই নিয়মিত রোগে পরিণত হয়েছে। রক্তের সুগারের পরিমাণ বেশি হলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। বেলে মেথানল জাতীয় একটি উপাদান রয়েছে এটি আমাদের রক্তের সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের সেটি নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই বেলকে ডায়াবেটিস নিরাময়ের একটি ঔষধ বলা হয়। 
যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে চিকিৎসকেরা তাদের বেশি বেশি বেল খাওয়ার পরামর্শ দেন। এটি একটি আশ জাতীয় ফল হওয়ায় ক্যান্সার নিরাময়ে ও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই বেল খেলে ডায়াবেটিস বাড়েনা বরং ডায়াবেটিস আরো নিয়ন্ত্রণে থাকে।

শেষ কথা

বেলের উপকার আমাদের শরীরের জন্য অনেক। তাই আমরা বলব সকলেরই বেল খাওয়া উচিৎ পরিমিত। আপনাদের যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লেগে থাকে তাহলে আমার ওয়েবসাইটি ঘুরে আসতে পাড়েন। আপনারা চাইলে আপনাদের মতামত জানাতে পারেন কমেন্ট করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন

comment url