কমলাতে যে সকল পুষ্টিগুণ রয়েছে-কমলা খাওয়ার উপকারিতাসমূহ

লেবুর খোসা খেলে যেসব উপকার হয়আমাদের দেশের শীতকালীন প্রধান ফলগুলোর মধ্যে কমলা অন্যতম। কমলা শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়স্ক পর্যন্ত সকল প্রকার মানুষেরই অনেক পছন্দের একটি ফল। আপনারা যারা কমলাতে যে সকল পুষ্টিগুণ রয়েছে এবং কমলা খাওয়ার উপকারিতাসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। তারা আমাদের নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পাড়েন।
আমরা এখানে আরও আলোচনা করেছি কমলার খোসাতে যেসব উপকার পাওয়া যায়। আপনারা নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসলে বুঝতে পারবেন কমলার খোসাতে কি কি উপকারিত উপাদান রয়েছে।

ভূমিকা

আমাদের দেশে কমলার চাষ অনেক বিরল। দেশে যে সকল কমলা পাওয়া যায় সেগুলো প্রায়ই অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা। কমলা একটি রসালো ফল। আজকাল কমলার অনেক কিছুই তৈরি হচ্ছে আমাদের দেশে। জুস থেকে শুরু করে চকলেট সবই তৈরি হচ্ছে কমলা থেকে। আপনারা নিচের আর্টিকেলটি পরলে এটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন।

কমলা খাওয়ার উপকারিতাসমূহ

  • যারা আপনারা শরীরের ওজন কমাতে চান। তারা নিয়মিত কমলা খেতে পারেন। কেননা কমলাতে রয়েছে সামান্য পরিমাণে ভিটামিন সি। যেটি শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এতে করে শরীর অনেক ভারসাম্যপূর্ণ থাকে।
  • কমলাতে ভিটামিন সি এর পাশাপাশি ফাইবার ও থাকে। এই পেকটিনটি আমাদের শরীরের রক্তের কোলেস্টেরল দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি এটি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল বের করে দেয় এবং ভালো কোলেস্টেরলের সংখ্যা বাড়ায়। তাই কমলা খেলে আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের জন্য আবার কমলা অনেক উপযোগী একটি ফল। কেননা কমলাতে রয়েছে আন্টিঅক্সিডেন্ট যেটি রক্তে শর্করার জোগান দিতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি শরীরের ইনসুলিন বৃদ্ধিতেও কার্যকর ভূমিকা রাখে। তাই ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে কমলা খেলে।
  • আমরা অনেকেই অনেক আগে থেকেই জানি কমলালেবু আমাদের ত্বকের জন্য অনেকটা উপযোগী একটি ফল। কমলাতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের অনেক রকম সমস্যা। যেমন ব্রণ,কালো কালো দাগ,ফুসকুড়ি জাতীয় কোন কিছু বের হওয়া ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। এছাড়া কমলার খোসা ত্বকে লাগিয়ে রাখলে ত্বকের অনেক উপকার হয়।
  • কমলা ক্যান্সার প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। কমলাতে রয়েছে লেমোনিন জাতীয় এক ধরনের উপাদান। যেটি শরীরে ক্যান্সার দানা বাঁধলে সেটাকে বাধা প্রদান করে। এছাড়াও ভিটামিন ডি,ভিটামিন সি,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যেগুলো অনেক রকম সাহায্য করে ক্যান্সার প্রতিরোধে আমাদের শরীরে।
  • বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে যে,ভিটামিন সি কিডনির পাথর গলতে অনেকটা ভূমিকা রাখে। যেহেতু কমলা তে ভিটামিন সি এর উপস্থিতি রয়েছে। তাই এটি কিডনির পাথর দূর করতেও অনেকটা ভূমিকা রাখে।

কমলাতে যে সকল পুষ্টিগুণ রয়েছে

আমাদের পছন্দের উপরের সারিতেই রয়েছে কমলা। বাংলাদেশের মানুষের অনেক পছন্দের একটি ফল হলো কমলা। কমলা অনেক রসালো একটি ফল। যেটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যদিও কমলা আমাদের দেশের কোন ফল নয় বা এটি আমাদের দেশে খুব একটা চাষও হয় না। 
তবে সময়ের সাথে সাথে আমাদের দেশেও কমলা চাষের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং এ কমলাগুলো অনেক মিষ্টি প্রজাতির। এছাড়া কমলাতে আরো যে সকল ভিটামিন জাতীয় উপাদান পাওয়া যায়। ভিটামিন বি,ক্যালসিয়াম,ফাইবার,মিনারেল,পটাশিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি অন্যতম। 
কমলা খেলে শরীরের উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্ট জাতীয় অনেক রকম সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে। আমাদের সকলেরই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে এই ভিটামিন সি জাতীয় উপাদানটি খাওয়া উচিত।

কমলার খোসাতে যেসব উপকার হয়

প্রথমত কমলা যেমন আমাদের শরীরের জন্য অনেক পুষ্টিকর। তেমনি কমলার খোসাও আমাদের অনেক কাজেই লাগে। সেগুলোর কয়েকটি আমরা নিচে তুলে ধরলাম।
  • কমলার খোসাতে ভিটামিন সি জাতীয় উপাদান রয়েছে। যেগুলো আমাদের ত্বককে মসৃণ,সুন্দর এবং উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ত্বকের তেলের ভারসাম্য ঠিক রাখতেও ভূমিকা রাখে।
  • আপনি কমলার খোসা সরাসরি আপনার ত্বকে লাগাতে পারবেন না। আপনাকে কমলার খোসা ত্বকে লাগাতে গেলে। প্রথমে এটিকে বাটাই করে নিতে হবে। এছাড়াও এটির সাথে যেকোনো ডাল বাটার মিস করাতে হবে। তারপর এটি আপনি আপনার ত্বকে লাগাতে পারেন। যদিও নিয়মিত এটি তার ত্বকে লাগায় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি এটির ফল পাবে সে।
  • যাদের মুখমণ্ডলে ব্রণের সমস্যা রয়েছে। তারা কমলার খোসা সেদ্ধ করে পানির সাথে মিশিয়ে। সেটি ফ্রিজে রেখে পরে মুখ ধোয়ার কাজে ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা অনেকটাই কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • এছাড়াও যারা রান্নায় তাদের স্বাদ বৃদ্ধি করতে চায়। তারা চাইলেই কমলার খোসা তাদের খাবারের সাথে মিশাতে পারে। এতে করে খাবারের সাধও বৃদ্ধি পাবে এবং এটিতে থাকা ভিটামিন সি শরীরে প্রবেশ করবে।
  • এছাড়া বিদেশের বিভিন্ন কোম্পানি এটি থেকে বিভিন্ন রকম জেলি,বিস্কিট,কেক,সুগন্ধি ইত্যাদি তৈরি করে।

অতিরিক্ত কমলা খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে

যেকোনো জিনিস বেশি খাওয়াই আমাদের জন্য অনেক ক্ষতিকর। কেননা এটিতে আমাদের শরীরের যে কোন রকম বড় ধরনের সমস্যা হয়ে যেতে পারে। আমাদের সবসময় সচেতন থাকা উচিত যে আমাদের কোন জিনিসটি বেশি খেতে হবে আর কোন জিনিসটি কম। নিচে অতিরিক্ত কমলা খেলে কি ধরনের সমস্যাগুলো হতে পারে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।
  • কমলাতে পটাশিয়াম থাকায় যাদের শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ একটু বেশি। তারা যদি অতিরিক্ত কমলা খেয়ে ফেলে তাহলে তাদের বুক জ্বালাপোড়া থেকে শুরু করে বমি পর্যন্ত হতে পারে।
  • কমলা একটি শীতকালীন ফল। বিশেষ করে বাচ্চাদেরই কমলা অনেক পরিমাণে খাওয়ানো হয়। তবে এটিও খেয়াল রাখতে হবে যে,শীতে যদি বাচ্চাদের অতিরিক্ত কমলা খাওয়ানো হয়। তাহলে তাদের ডায়রিয়া,জ্বর,নিউমোনিয়া,টাইফয়েড সহ আরো বড় ধরনের রোগ হতে পারে। তাই শীতে বাচ্চাদের সাবধানের সাথে কমলা খাওয়ানো উচিত।
  • লেবুর পাশাপাশি কমলাতেও এসিড রয়েছে। তাই কমলা অতিরিক্ত গ্রহণ করলে পেটের অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। এছাড়া গ্যাসের সমস্যা অনেক বেরে যেতে পারে এবং পেট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বাড়ে।
  • আবার কেউ যদি নিয়মিত কমলা অতিরিক্ত খাওয়া শুরু করে। তাহলে তার ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা অনেক থাকে।

শেষ কথা

কমলা অনেক পুষ্টিকর জাতীয় একটি খাবার আমাদের জন্য। তবে সেটি পরিমিত খাওয়ায় অনেক ভালো। দিনে ১-২ টা কমলা খাওয়ায় আমাদের জন্য যথেষ্ট। আমাদের উপরের পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে। তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন আপনার মন্তব্যটি এবং এটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার ও করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন

comment url