২০২৪ ডায়াবেটিস রোগীর খাবার চার্ট-ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত খাবার তালিকা
ডায়াবেটিস শরীরের একটি এমন বাজে অবস্থা। যেটি হলে আমাদের শরীর নিজে থেকে ইন্সুলিন তৈরি করতে পারেনা। এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমান অনেকটা বেরে যায়। আপনারা যারা ২০২৪ ডায়াবেটিস রোগীর খাবার চার্ট-ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত খাবার তালিকা সম্পর্কে জানতে চান। তারা নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।২০২৪ ডায়াবেটিস রোগীর খাবার চার্ট-ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত খাবার তালিকা ছাড়াও আমরা এখানে আরও বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি ডায়াবেটিস রোগীদের যেসব খাবার এরিয়ে চলা উচিত নিয়ে।
ভূমিকা
ডায়াবেটিস এখন প্রায় অনেক মানুষেরই হচ্ছে। এই রোগ হওয়ার অনেক ধরণের কারন হতে পারে। খাবারের জন্য,নিয়মিত ব্যায়াম না করের জন্য,ঘুমের সমস্যার জন্য। এটি হওয়ার মূল কারন হল শরীরে যখন শর্করার পরিমান অনেক বেরে যায়। তখন শরীর বাঁধাহীনভাবে ইন্সুলিন তৈরি করতে পারেনা বা পারলেও সেটি সঠিক ভাবে কাজ করেনা।আর এভাবেই শরীরে ধিরে ধিরে ডায়াবেটিস নামক রোগের আগমন ঘটে। যেটি থেকে মুক্তি পেতে এখন অনেক নিয়ম রয়েছে। যদি কেউ এসব নিয়ম সঠিকভাবে মেনে চলে তাহলে তার ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আমরা নিচে এসব বিষয় তুলে ধরেছি যেগুলু মেনে চললে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি মিলবে। আপনারা চাইলে সেগুলু পড়ে আসতে পারেন।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত খাবার তালিকা
- সবুজ শাকসবজি : সবুজ শাকসবজি যতটা পুষ্টিকর ততটাই এটিতে কালোরীর পরিমানও কম। এসব সবুজ শাকসবজি আপনার শরীরের শরকারের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। কেননা এসবে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ অনেক কম থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যার কারণে সবুজ শাকসবজি বেশি করে খাওয়া উচিত।
- ডিম : আমাদের সকলেই জানি ডিমে অনেক ধরনের পুষ্টি জাতীয় উপাদান রয়েছে। ডিম খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়। যদি কেউ নিয়মিত একটি করে ডিম খেতে পারে। তাহলে তার হৃদরোগের অনেক ধরনের ঝুঁকি থেকে তার মুক্তি মিলে। ডিমে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ অনেক কম থাকায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রোটিনের একটি বড় উৎস হিসেবে কাজ করে।
- তেলযুক্ত মাছ : মাছে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে যেগুলোর মধ্যে ফাটি এসিড,শর্করা,ভিটামিন অন্যতম। মাছে ফাটি এসিডের মধ্যে রয়েছে Dha এবং Epa এ দুটি উপাদানে হার্টেরস্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও চর্বিযুক্ত মাছ খেলে শরীরে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং রক্তে শরকারার পরিমাণ ঠিক থাকে।
- সাইট্রাস জাতীয় ফল : সাইট্রাস জাতীয় ফলে অনেক ধরনের পুষ্টি জাতীয় উপাদানের থাকে। আমাদের দেশে যে সকল সাইট্রাস জাতীয় ফল পাওয়া যায়। সেগুলোর মধ্যে হল লেবু,জাম্বুরা,কমলালেবু অন্যতম। এছাড়াও এগুলো বলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,ভিটামিন,পটাশিয়াম ইত্যাদির একটি বড় উৎস পাওয়া যায়।
- মসুর ডাল : ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি বিশেষ খাবার হল মসুর ডাল। কেননা মসুর ডালে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ অনেক কম থাকায়। এটি রক্তের শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখতে ভূমিকা রাখে।
- রসুন : রসুন অনেক ধরনের পুষ্টিকরণ সম্পন্ন একটি ফল। রসুনে ডায়াবেটিস রোগীদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়াও এটি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা বেশিরভাগ মানুষ রসুন খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করে থাকি।
ডায়াবেটিস রোগীর যেসব বায়াম করা উচিত
- নিয়মিত নির্দিষ্ট একটি সময় ধরে বাসায় হাটাহাটি করুন।
- বাসায় যদি যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা না থাকে। তাহলে ছাদে গিয়ে হাটাহাটি করুন।
- যদি একবারে ৩০ মিনিট হাঁটতে সমস্যা হয়। তাহলে সময় ভাগ করে নিয়ে নিয়ে হাটুন।
- যদি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকেন তাহলে সেদিন ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন।
- নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে ব্যায়াম করুন। তবে মনে রাখবেন একদিনে আবার অনেক বেশি ব্যায়াম করে ফেলবেন না। খেয়াল রাখতে হবে কোনদিন যেন ব্যায়াম বাদ না পড়ে।
- শরীরের বিভিন্ন নড়াচড়ার ব্যায়াম করতে হবে। যেমন হাটু,কোমর,ঘাড় ইত্যাদির বায়ান করতে হবে।
- এছাড়াও যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা ট্রেডমিল মেশিন ব্যবহার করে ব্যায়াম করতে পারেন।
- ডায়াবেটিস রোগীদের বায়ান প্রতিদিনই করা উচিত। বিভিন্নভাবে শারীরিক বায়াম সম্ভব তবে তাদের নিয়মিত হাঁটা উচিৎ। যেটি ডাক্তারেরা তাদের অনেক বেশি করতে পরামর্শ দেন।
ডায়াবেটিস রোগীদের যেসব খাবার এরিয়ে চলা উচিত
- ভাজাপোড়া খাবার : উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার যেমন ভাজা মুরগি,ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খেলে শরীরের ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের ইনসুলিন সংবেদনসিলতাকে প্রভাবিত করে।
- অ্যালকোহল : যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের প্রতিনিয়ত অনেক ধরনের ওষুধ খেতে হয়। অ্যালকোহলে সুগারের পরিমাণ থাকায় এটি অতিরিক্ত খেলে শরীরের শর্করার মান কম বেশি হতে পারে। ফলে সেটি ডায়াবেটিসের ঔষধের উপর প্রভাব পড়তে পারে।
- চিনি সমৃদ্ধ মসলা : যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে ডাক্তার তাদের চিনি খাওয়া থেকে দূরে থাকতে বলেন। বর্তমান বাজারে অনেক ধরনের মিষ্টি জাতীয় মশলা রয়েছে,বারবিকিউ সস রয়েছে,মিষ্টি সালাত রয়েছে। যেগুলোর ভেতরে প্রচুর পরিমাণে শর্করা রয়েছে যেটি রক্তে শরকারের মাত্রাকে প্রভাবিত করে।
- চিনি যুক্ত খাবার এবং পানীয় : বর্তমান বাজারে চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয়র অভাব নেই। যেটি আমাদের শরীরে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যান্ডি,কেক,স্থানীয় সূরা জাতীয় খাবার,কুকিজ যেগুলো রাতারাতি আমাদের শরীরের শর্করা অনেকটা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের এই সকল খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত।
- ফলের রস : ফলের রস এটি প্রাকৃতিক খাবার হলেও এটিতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা রয়েছে। একসময়ে অতিরিক্ত ফলের রস না খাওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো। কেননা শরীরে অতিরিক্ত শর্করা প্রবেশ করালে ডায়াবেটিস রোগীদের বিভিন্ন রকম সমস্যা হতে পারে।
২০২৪ ডায়াবেটিস রোগীর খাবার চার্ট
সকালের নাস্তা | দুপুরের খাবার | বিকেলের নাস্তা | রাতের খাবার |
---|---|---|---|
রুটি-১টা গমের আটার রুটি | ভাত-দেড় কাপ ভাত | সিজনাল ফল-পছন্দমত ১টা সিজনাল ফল | রুটি অথবা ভাত-১/২ কাপ ভাত বা ১ টা আটার রুটি |
দুধ-১ গ্লাস দুধ যেটি ফ্যাট ছাড়া | মাছ বা মাংশ-৬৫ গ্রাম পরিমাণ ফ্যাট ছাড়া রান্না করা মাছ বা মাংস | বুট এবং কলাই জাতীয় খাদ্য-১/৩ কাপ বাদাম,বুট অথবা কলাই জাতীয় খাদ্য | মাছ অথবা মাংস-৬০ গ্রাম পরিমাণ ফ্যাট ছাড়া রান্না করা মাছ বা মাংস |
ডিম-১ টা সিদ্ধ মুরগী বা হাঁসের ডিম | শাক সবজি-১ কাপ পাতা যুক্ত শাক খাকবে অবশ্যই, বাকী দেড় কাপ অন্যান্য শাকসবজি | শাক সবজি-১ কাপ পাতা যুক্ত শাক অবশ্যই, বাকী আধা কাপ অন্যান্য সবজি | |
শাক সবজি-১ বা ১/২ কাপ পাতাযুক্ত শাকসবজি | ডাল-১ কাপ মাঝারি ঘন ডাল | সিজনাল ফল-১টা সিজনাল ফল |
শেষ কথা
আমরা উপরে আলোচনা করেছি ডায়াবেটিসের অনেক ধরণের বিষয় নিয়ে। তবে আপনাদের যাদের ডায়াবেটিস হয়ে তারকা ডাক্তারের পরামর্শ মত চিকিৎসা নিবেন। আমাদের উপরের পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে। তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন আপনার মন্তব্যটি এবং এটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার ও করতে পারেন।
আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন
comment url