আখের রস খাওয়ার ১০টি উপকারিতা-আখের গুড়ে যেসব উপকারিতা রয়েছে
তালের শাসে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছেআখের রস আমাদের সকলেরই অনেক পছন্দের। এটি আমাদের শরীরের ডিহাইড্রেশন দূর করতে
সাহায্য করে। এছাড়াও আখ একটি গ্রীষ্মকালীন ফসল। আপনারা যারা আখের রস খাওয়ার ১০টি
উপকারিতা-আখের গুড়ে যেসব উপকারিতা রয়েছে সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান।
তারা আমাদের নিচের আর্টিকেলটি পরে আসতে পারেন।
আমারা সেখানে আখের রস খাওয়ার ১০টি উপকারিতা-আখের গুড়ে যেসব উপকারিতা রয়েছে
ছারাও আখ চাষে বাংলাদেশের অবস্থান কততম ও বাংলাদেশের কোন অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি আখ
উৎপাদন হয় সেটি সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
ভূমিকা
বাংলাদেশ মূলত ছয় ঋতু সম্পূর্ণ একটি দেশ। আমাদের দেশে সারা বছর বিভিন্ন রকম
ফসলের চাষ হয়ে থাকে। বাংলাদেশ জন্ম হওয়ার পর থেকেই এটিকে সকালে কৃষি প্রধান
একটি দেশ হিসেবেই চিনে আসছে। আমাদের দেশের আখের চাষ সবচেয়ে বেশি হয় উত্তর
অঞ্চলে। এ অঞ্চলেই আমাদের দেশের সবচেয়ে বেশি চিনির কল রয়েছে। আমরা আমাদের নিচের
এই আলোচনায় আখের রস খাওয়ার ১০টি উপকারিতা-আখের গুড়ে যেসব উপকারিতা রয়েছে সেটি
নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যেটি পড়লে বাংলাদেশের আখ সম্পর্কে আপনারা আরো
ভালোভাবে জানতে পারবেন।
আখের রস খাওয়ার ১০টি উপকারিতা
গ্রীষ্মের অত্যন্ত তাপদাহে বর্তমান সময়ে সারা দেশর মানুষ প্রায় বিকল। এ সময়
আমাদের সকলের ঠান্ডা পরিবেশে থাকা উচিত। এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে এমন জিনিস পান
করা উচিত। এটির জন্য আখের রস অনেক কার্যকরী একটি পানিয় হতে পারে। আখের রসে প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে।
যেগুলো আমাদের শরীরকে সুস্থ এবং সবল রাখতে সাহায্য করে। নিচে আমরা জানবো আখের রস
খাওয়ার ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে।
- যাদের পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যা। যেমন, হজম সঠিকভাবে হয় না। তারা যদি নিয়মিত আখের রস খায় তাহলে এ সমস্যা থেকে তাদের মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
- আখের রস আমাদের শরীরের ডিহাইড্রেশন দূর করতে সাহায্য করে। ফলে আমাদের শরীর অনেকটা সুস্থ থাকে।
- যেহেতু আখে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যার ফলে আখের রস আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।
- যে সকল রোগীদের লিভারের সমস্যা রয়েছে। এছাড়াও আখের রস জন্ডিস ভালো করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- আমাদের শরীরে যে সকল খারাপ বর্জ্য রয়েছে। আখের রস সেটি আমাদের শরীর থেকে বের করতে সাহায্য করে।
- গ্রাম অঞ্চলের দিকে মানুষজন আখ চিবিয়ে খেতে বেশি পছন্দ করে। এটি দাতের জন্য অনেক ভালো। দাঁতকে শক্ত করতে সাহায্য করে এটি।
- এছাড়া আঁখের রসে বিভিন্ন রকম পুষ্টি জাতীয় উপাদান থাকায়। হাড়ের ব্যথা,দাঁতের গোড়ায় ব্যথা। সেগুলো ভালো করতে সাহায্য করে।
- আমাদের শরীরে চিনির প্রয়োজন অনেকটাই রয়েছে। আমাদের শরীরে চিনির ঘাটতি হলেই ডিহাইড্রেশনের দেখা দেয়। আখে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। যেগুলো আমাদের শরীরের চিনির ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।
- যাদের কিডনি জাতীয় সমস্যা রয়েছে। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি পেতে চান তাদের জন্য আঁখের রস অনেক কার্যকরী।
- এছাড়াও আখের রস নিয়মিত পান করলে। তার ক্যান্সারের না হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়।
বাংলাদেশের কোন অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি আখ উৎপাদন হয়
বাংলাদেশে আখের চাষ খুব বেশি একটা লক্ষ্য করা যায় না। তবে বাংলাদেশের উত্তর
অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি আখের চাষ হয়। বিশেষ করে রাজশাহী,নাটোর এই অঞ্চলগুলোতে
প্রচুর পরিমাণে আখের চাষ হয় গ্রীষ্মকালে। উত্তরাঞ্চলের যে সকল জেলাগুলোতে
সবচেয়ে বেশি আখের উৎপাদন হয় সেগুলোর মধ্যে নাটোর অন্যতম।
বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী দেখা যায় প্রত্যেক বছর নাটোর জেলাতে সবচেয়ে বেশি আখের
উৎপাদন হয়। শুধু নাটোর নয় পাবনা এবং সিরাজগঞ্জ জেলার পাশাপাশি রাজশাহী ও
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাতেও প্রচুর পরিমাণে আখের উৎপাদন হয়। তবে
নাটোর,পাবনা,সিরাজগঞ্জে অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি আখের উৎপাদন হওয়ার একটি প্রাকৃতিক
কারণও রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কাঁঠালকে কেন জাতীয় ফল বলা হয়
এই অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল চলনবিল প্রবাহিত হয়েছে। তাই
গ্রীষ্মকালেও এ অঞ্চলে খুব ভালো চাষাবাদ হয়। তাই এ অঞ্চলে বাংলাদেশের সবচেয়ে
বেশি আখের উৎপাদন লক্ষ্য করা যায়। আখের রস খাওয়ার ১০টি উপকারিতা-আখের গুড়ে যেসব
উপকারিতা রয়েছে সেটি জানতে আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়ুন।
তবে বাংলাদেশের দক্ষিণঅঞ্চলে যে আখের উৎপাদন হয় না এমনটি নয়। বর্তমান সময়ে
বিভিন্ন আখের প্রকার এসেছে। যেগুলো লবণাক্ত পরিবেশেও খুব ভালো জন্মায়। সেজন্য
এখন দক্ষিণঅঞ্চলের জেলাগুলোতেও প্রচুর পরিমাণে আখের চাষ দেখা যাচ্ছে।
আখ চাষে বাংলাদেশের অবস্থান কততম
বাংলাদেশের অন্যান্য খাতের মতো আখা খাতেও বিশ্ব অবস্থান উপরের দিকেই। বর্তমান
সময়ে বাংলাদেশের আখ খাতটি বিশ্বে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। বরাবরের মতোই আখ খাতে
সবার শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল। পাট চাষে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ প্রথম স্থানে
রয়েছে। এছাড়াও তৈরি পোশাকশিল্প,প্রবাসে রেমিটেন্সে প্রথম স্থান রয়েছে
বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের যত আখ উৎপাদন হয় তার ৭০ শতাংশই বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চল থেকে আসে।
সময়ের সাথে সাথে কৃষকগণ তাদের জমিতে অন্যান্য ফসল উৎপাদন শুরু করছেন। তাই সময়ের
পরিক্রমায় আঁখের উৎপাদন অনেকটাই কমে যাচ্ছে। তবে বিশ্বে বাংলাদেশের আখ উৎপাদনের
অবস্থান শুরু থেকেই দশের মধ্যেই ছিল। বর্তমান সময় যেটি অষ্টমে এসেছে।
আখ থেকে কি চিনি উৎপাদন হয়
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সকলেরই চিনির প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক। বিভিন্ন কাজে আমাদের
চিনি ব্যবহার করতে হয়। তাই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক চিনি প্রয়োজন হয়। তবে
আমরা কি কখনো চিন্তা করে দেখেছি। যে এই চিনি গুলো আসলে কি দ্বারা তৈরি হয় বা
কোথা থেকে আসে। আমাদের দেশে অনেক ধরনের ফসল রয়েছে।
যেগুলো থেকে চিনির উৎপাদন করা হয়। তার মধ্যে আখ অন্যতম। আমরা সকলেই জানি আখ থেকে
অনেক ভালো চিনির উৎপাদন করা সম্ভব। তবে আখ থেকে সবচেয়ে বেশি চিনি উৎপাদন করা হয়
আমাদের দেশে। বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি চিনিকল রয়েছে। এগুলো আখের
বড় বড় কারখানাতে আখ থেকে লাল চিনি উৎপাদন করা হয়।
আরও পড়ুনঃ শসার খোসাতে যে যে উপকার রয়েছে
যেটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে খুব ভালো প্রভাব রাখে। আখের রস খাওয়ার ১০টি
উপকারিতা-আখের গুড়ে যেসব উপকারিতা রয়েছে সেটি জানতে আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়ুন।
বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের চিনি গুলোই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
চিনি উৎপাদন করার জন্য প্রথমে আঁখগুলোকে জমি থেকে কাটিয়ে।
সেগুলো চিনিকলে নিয়ে আসা হয়। তারপর সেগুলো চিনি উৎপাদক মেশিনের মাধ্যমে।
বিভিন্ন প্রক্রিয়ার দ্বারা চিনি উৎপাদন করা হয়। তারপর সেসব চিনি আরো ভালোভাবে
প্রক্রিয়াজাত করার পরে। সেগুলো বাজারজাত করার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে
দেওয়া হয়।
আখের গুড়ে যেসব উপকারিতা রয়েছে
আমাদের জীবনে যেমন চিনির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা যদি চিনি না পাই তাহলে
গুড়কে ব্যবহার করে থাকি চিনি হিসেবে। চিকিৎসকেরা সবসময় পরামর্শ দেন যে গুড়
খাওয়া চিনির পরিবর্তে। কারণ চিনিতে যে সকল ক্ষতি হয় শরীরের তা গুড়ে অনেকটাই কম
হয়। গুড় আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নিয়মিত ব্যবহার হয়ে আশা একটি খাবার। নিচে আখের
গুড়ের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
- যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ রয়েছে। নিয়মিত গুড় খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর হয়।
- নিয়মিত গুড় খেলে এটি লিভার কে পরিষ্কার রাখতে অনেকটা সাহায্য করেন।
- যাদের দৃষ্টি শক্তিতে সমস্যা রয়েছে। তারা যদি গুড় খায় তাহলে তাদের এ দুর্বলতা অনেকটাই কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বলা হয় গুড় দৃষ্টিশক্তিকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- গুড় আমাদের শরীরের বিভিন্ন খারাপ পদার্থগুলিকে শরীর থেকে বের করতে ভূমিকা রাখে।
- গুড়ের আছে আন্টিকারসিনোজেনিক একটি বৈশিষ্ট্য। যেটি শরীরের ক্যান্সার বিরোধী উপাদান হিসেবে কাজ করে থাকে।
- এছাড়াও যাদের রক্তের বিভিন্ন রকম রোগ বালাই রয়েছে। সেগুলো থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে গুড়।
- নিয়মিত গুড় খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
- এছাড়াও নিয়ম গুড় খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এটি চুলকে ভালো রাখতে ও সাহায্য করে।
- যাদের দেহ অনেক দুর্বল। তাদের দেহে শক্তি বাড়াতে গুড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও গুড় খেলে শরীরের রক্তস্বল্পতা কমে যায়।
শেষ কথা
আমরা আমাদের উপরের আলোচনায় আখের রস খাওয়ার ১০টি উপকারিতা-আখের গুড়ে যেসব
উপকারিতা রয়েছে এবং আখ চাষে বাংলাদেশের অবস্থান কততম তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
করেছি। আপনাদের যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে। তাহলে আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের
সাথে শেয়ার করুন। এবং আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত।
আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন
comment url