২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে-ঈদুল আযহার তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য

বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহর কোনটিমুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটি ধর্মীয় উৎসবগুলির মধ্যে ঈদুল আযহা অন্যতম। এই ঈদে বান্দা কুরবানির দেওয়ার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার আনুগত্য লাভ করার চেষ্টা করে। আপনারা যারা ২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে-ঈদুল আযহার তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তারা আমাদের নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।
আমরা সেখানে ২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে-ঈদুল আযহার তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য ছারাও কুরবানির মাংস কত ভাগ হয় এবং কিভাবে বন্টন করবেন ও সকল মুসলমানদেরই কি কোরবানি দেওয়া জরুরী নিয়ে আলোচনা করেছি।

ভূমিকা

মুসলমানদের প্রধান যে দুটি উৎসব রয়েছে তার মধ্যে কোরবানির ঈদ অন্যতম। এই ঈদের কিছু নিজস্ব সামাজিক গুরুত্ব রয়েছে। এই ঈদে আল্লাহ তায়ালার বান্দা তার স্রষ্টাকে খুশি করার জন্য সবচেয়ে ভালো কোন জিনিস তার জন্য উৎসর্গ করে। যেটার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করে।
কুরবানী আমাদের শিক্ষা দেয় ত্যাগ জীবনকে সুন্দর করে। আর আল্লাহ তাআলার এই মুমিনগণ আল্লাহতালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সবটুকু উজাড় করে দেয়।

ঈদুল আযহার তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য

ঈদুল আযহা মুসলমানদের জন্য একটি ঐতিহ্যমন্ডিতে উৎসব। সকল মুসলমানের জন্য কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব। আর মুসলমানগণ আল্লাহতালাকে খুশি করার জন্য করবানি করে। ঈদুল আযহার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো। একজন বান্দা তার স্রষ্টাকে খুশি করার জন্য তার সব থেকে প্রিয় জিনিসটি কুরবানী করবেন। 
মুসলমানদের কাছে ঈদুল আযহার তাৎপর্য ব্যাপক। যেটির কারণে পৃথিবী জোড়া যত মুসলমানগণ রয়েছেন। তারা সবাই জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আযহা পালন করে থাকেন। ঈদুল আযহার উদ্দেশ্য হলো,কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহতালার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তার দাসত্ব করার জন্য। 
বান্দা পৃথিবীতে এসেছেন আল্লাহতালার বিভিন্ন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। ঈদুল আযহা তার জন্য তেমন একটি পরীক্ষার কেন্দ্র মাত্র। বান্দা কুরবানীর মাধ্যমে তার স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করে।

মুসলমানদের কাছে কোরবানির তাৎপর্য কতটুকু

মুসলমানরা ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসী। ইসলাম ধর্মকে পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তির ধর্ম বলা হয়। বর্তমান সময়ে আমরা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মাহ। মূলত মুসলমানদের বছরে দুটি বড় ধর্মীয় উৎসব রয়েছে। একটি হল ঈদুল ফিতর। যেটি এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহ তালাকে সন্তুষ্টি অর্জনের দাঁড়া পালন করা হয়। 
আর অপরটি হল ঈদুল আযহা। যেটিতে কোন প্রিয় জিনিস আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য কুরবানীর মাধ্যমে পালন করা হয়। কুরবানী সকল মুসলমানের দেওয়া ওয়াজিব। এটির মাধ্যমে মোমিন তার মনকে আরও বেশি পরিষ্কার করে। এছাড়াও কুরবানীর মাংস গরিব এবং আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যে বিতরণের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে ভাতৃত্ববোধও বৃদ্ধি পায়। 
আল্লাহ তাআলা কুরবানীর কথা কোরআন শরীফ এবং অনেক হাদীসের মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন। মুসলমানদের কাছে আল্লাহতালাকে খুশি করার জন্য কোরবানি তাৎপর্য অসীম। কোরবানির মাধ্যমে মুমিনগণ তার স্রষ্টাকে খুশি করে জান্নাতের যাওয়ার পথ আরো সুগম করে।

২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে

মুসলমানদের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত দুটি আনন্দের দিনের মধ্যে ঈদুল আযহা একটি। ঈদুল আযহা ঈদুল ফিতর শেষ হওয়ার ঠিক ২ মাস ১০ দিন পরে অনুষ্ঠিত হয়। যেটি আরবি জিলহজ মাসের ১০ তারিখ। তবে বাংলাদেশের ভৌগোলিক কিছু কারণে ঈদ পালনে আরবদের সাথে কিছুটা তারতম্য রয়েছে। 
তবে ২০২৪ সালের ঈদুল আযহা হতে পারে ইংরেজি জুন মাসের ১৬ বা ১৭ তারিখে। যদি ১৬ তারিখে সৌদি আরবে ইট পালিত হয়। তাহলে অবশ্যই ১৭ই জুন ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশে ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হবে।

সকল মুসলমানদেরই কি কোরবানি দেওয়া জরুরী

মুসলমানদের কাছে কোরবানির গুরুত্ব অনেক। দ্বারা বান্দা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে। বান্দা তার সৃষ্টিকর্তার আরো কাছাকাছি হতে পারে এটির মাধ্যমে। সকল মুসলমানদের জন্যই কোরবানি দেওয়া একটি ওয়াজিব কাজ। আল্লাহতালা এই কাজটিকে ফরজ করেননি। কেননা তার অনেক বান্দা এমন রয়েছে। যাদের কুরবানী দেওয়ার সামর্থ্য নেই। 
সেজন্য আল্লাহতালা বলেছেন যাদের কুরবানী দেওয়ার সামর্থ্য নেই। তাদের কোরবানি দিতে হবে না। সেজন্য আল্লাহতালা কোরবানির মাংস কি তিন ভাগে ভাগ করার কথা বলেছেন। যেন যারা কোরবানি দিতে পারেনা। তাদের যেন কোরবানির সময় কুরবানীর মাংসের অভাব না হয়। আল্লাহতালা কতটা মহান তিনি তার বান্দার জন্য সকল রকম ব্যবস্থা করে রেখেছেন।

কুরবানীর পশুর যত্ন এবং তার খাবার

কোরবানির ঈদ নিয়ে বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কেননা শহর থেকে প্রায়ই সকলেই পালনের জন্য গ্রামে চলে আসে। এছাড়াও গ্রামের কুরবানী গুলো সবগুলো এক জায়গাতেই হয়। আমাদের সকলেরই উচিত যাদের সামর্থ্য রয়েছে তাদের কুরবানী দেওয়া। এতে আল্লাহ তায়ালা বান্দার উপর অনেক সন্তুষ্ট হন। 
ঈদের বেশ কয়েকদিন আগে আমরা কোরবানির গরু কিনে থাকি। কুরবানি গরু কেনার পরে আমাদের সেগুলোর বিভিন্ন রকম পরিচর্যা করা উচিত। কুরবানির গরুকে সব সময় ভালো ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন দানাদার জাতীয় খাবার রয়েছে যেগুলো খাওয়ালে কোরবানির গরু অনেক স্বাস্থ্যবান থাকে। এছাড়াও গমের ভুষি খাওয়ানো যেতে পারে। 
এছাড়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পানি খাওয়ানো উচিত। যদি পশুর হজমে কোন রকম সমস্যা হয় তাহলে আদা পানি খাওয়ানো যেতে পারে। এছাড়াও গ্রামাঞ্চলে প্রচুর সবুজ ঘাস পাওয়া যায়। যেগুলো খাওয়ালে গরু অনেক বেশি সুস্থ এবং সবল থাকে। আর লক্ষ্য রাখতে হবে যদি কোরবানির গরুর কোন রকম সমস্যা হয়। তাহলে স্থানীয় কোন পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কুরবানির মাংস কত ভাগ হয় এবং কিভাবে বন্টন করবেন

কোরবানি মুসলমানদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি কার্যক্রম। যেটির মাধ্যমে বান্দা তার সৃষ্টিকর্তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে। আল্লাহ তায়ালা বলে দিয়েছেন কোরবানির মাংস ৩ ভাগে ভাগ হবে। ১ম ভাগটি গরিবদের জন্য,২য় ভাগটি আত্মীয়-স্বজনের জন্য এবং ৩য় ভাগটি নিজের জন্য। তাই যারা কুরবানী দেই তাদের এই মাংস তাদের আশেপাশের গরীব-দুঃখীদের মধ্যে ভাগ করে দিতে হয়। 
একটি ভাগ তাদের আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে ভাগ করে দিতে হয়। একটি ভাগ নিজেদের খাবারের জন্য রেখে দিতে হয়। আর যদি কেউ এই তিনটির মধ্যে কোন একটি পালন না করে। তাহলে আল্লাহ তাআলা তার কোরবানি কবুল করবেন না। তাই আমাদের সকলেরই উচিত কোরবানির মাংসের সঠিক বন্টন নিশ্চিত করা।

কুরবানীর মাংস যেভাবে সংরক্ষণ করবেন

কোরবানির ঈদ আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসবগুলির মধ্যে একটি। কোরবানি ঈদে আমারা সকলেই যথেষ্ট ভালো পরিমাণ মাংস পেয়ে থাকি। যেটি আমরা সংরক্ষণের মাধ্যমে অনেকদিন যাবত খেতে পারি। বিশেষ করে আমরা এই মাংসটি রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করে থাকি। তবে আমাদের এটি সংরক্ষণের পূর্বে খেয়াল রাখতে হবে। যেন মাংসটি প্রথমে ধুয়ে নেওয়া হয়।
 তা না হলে মাংস তে থাকা রক্তের কারণে মাংসটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও মাংসগুলো রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। মাংস তে বিভিন্ন রকম মসলা মিশিয়ে সস মিশিয়ে সেটিও রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে আমরা যে কুরবানীতে দিচ্ছি। এত ত্যাগ স্বীকার করছি কষ্ট করছি শুধু আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্টি করার জন্য।
সবসময়ই কুরবানী দেওয়ার সময় মনে থাকতে হবে এটি আমরা আল্লাহতায়ালাকে খুশি করার জন্যই দিচ্ছি। এছাড়াও এসব সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। আপনারা চাইলে সেগুলো উপরে আসতে পারেন। মুসলমান কুরবানী দেয় আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্টি করার জন্যই।

কোরবানির ঈদে যেসব বিষয়ের সতর্ক থাকতে হবে

মুসলমানদের কাছে ঈদ অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব। বিশেষ করে যারা নগরে থাকে তাদের ঈদের আগে বাড়ি ফেরার অনেক তারা থাকে। অনেকেই রয়েছে যারা ঈদুল ফিতরে বাড়িতে না আসলেও ঈদুল আযহাতে বাড়িতে অবশ্যই আছে। কেননা ঈদুল আযহা তে কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার একটি ধর্মীয় কার্যক্রম রয়েছে। 
তবে সব সময় খেয়াল রাখতে হবে কোরবানির ঈদে খুব কম পরিমাণ মাংস খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কেননা কোরবানির ঈদে বেশ কয়েকদিন যাবত নিয়মিত আমাদের গরুর মাংস খাওয়া হয়ে যায়। এতে করে পেট খারাপ এবং যাদের হাই প্রেসার রয়েছে। তাদের শরীরে বিভিন্ন রকম খারাপ প্রভাব পড়তে পারে এটির।
কুরবানীর যে সকল বর্জ্য রয়েছে সেগুলো মাটির নিচে পুঁতে রাখার চেষ্টা করতে হবে। এছাড়াও কোরবানির মাংস কাটা থেকে শুরু করে যে সকল কাজে রয়েছে। সেগুলো কাজ অনেক মনোযোগ দিয়ে করতে হবে। তা না হলে যেকোনো সময় অনেক বড় ধরনের বিপদ হয়ে যেতে পারে।

শেষ কথা

আমরা উপরে ২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে-ঈদুল আযহার তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য ছারাও কুরবানির মাংস কত ভাগ হয় এবং কিভাবে বন্টন করবেন সকল মুসলমানদেরই কি কোরবানি দেওয়া জরুরী সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আপনাদের যদি আলোচনাটি ভাল লেগে থাকে। তাহলে এটি আপনারা আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এবং কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন

comment url