তালের শাসে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে-তাল খাওয়ার যেসব উপকারিতা রয়েছে

কমলা খাওয়ার উপকারিতাসমূহতালে প্রায় ৮০% পানি রয়েছে। এটিতে আরও অনেক ধরণের পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। যেটির কারনে তাল আমাদের সকলেরই খাওয়া উচিৎ। আপনারা যারা তালের শাসে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে-তাল খাওয়ার যেসব উপকারিতা রয়েছে সেগুলু সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। তারা আপনারা আমাদের নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।
আমরা সেখানে আরও আলোচনা করেছি তালের রসে যেসব উপকারিতা রয়েছে। নিচে পরলে আপনারা আরও জানতে পারবেন যে পাকা তালের মাধ্যমে যেসব খাবার তৈরি করা যায়। যেটির মাধ্যমে আপনারা তাল সম্পর্কে আরও জানতে পারবেন। 

ভূমিকা

তাল বাংলাদেশের মানুষ যে অনেক বেশি পছন্দ করে এমন কোন ফল নয় এটি। তবে এটিতে প্রচুর ভিটামিন জাতীয় উপাদান রয়েছে। যেগুলো আমাদের শরীরকে অনেক বড় ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। নিচে আমরা তালের শাসে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে-তাল খাওয়ার যেসব উপকারিতা রয়েছে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা চাইলে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।

তাল খাওয়ার যেসব উপকারিতা রয়েছে

তাল একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। এটিতে অনেক ধরনের ভিটামিন রয়েছে। এসব ভিটামিন আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষয় রোধ করে। ফলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে। নিচে আমরা তাল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারত আলোচনা করেছি। যেটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন তালের শাসে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে-তাল খাওয়ার যেসব উপকারিতা রয়েছে।
  • তালের রসে ভিটামিন সি থাকায় এটি শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ রয়েছে তারা সকাল বিকাল তালের রস খেতে পারেন।
  • যাদের অনেকদিন ধরে কাশি রয়েছে। তারা নিয়মিত তিন থেকে চার চামুচ তালের রসের সাথে সামান্য দুধ মিশিয়ে খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
  • যাদের বুকে বিভিন্ন রকম জ্বালাপোড়া রয়েছে। নিয়মিত ২-৩ চামুচ তালের রস খায়। তাহলে এটি থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
  • তালের আশে ক্যালসিয়াম থাকায় এটি দাঁতের ব্যথা,দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়া ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
  • এছাড়াও তালের শাস স্মৃতিশক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
  • তালের শাঁসে প্রচুর পরিমাণে আন্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। যেহেতু আন্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের নিয়ামক। তাই এটি খেলে ক্যান্সারের রোগ প্রতিরোধ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পায়।
  • এছাড়াও তালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অনেকটাই ভূমিকা রাখে।
  • ডায়াবেটিসের রোগীদের শরীরের রক্তের চাপ ঠিক রাখতে। তালের শাঁস খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখে। যার ফলে রক্তচাপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণ থাকে।
  • তালে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,ফসফরাস,আয়রন,সালফার,ম্যাঙ্গানিজ,
  • কপার ইত্যাদি থাকায়। এটি খেলে আমাদের দৃষ্টি শক্তি অনেকগুণ বৃদ্ধি পায়। তাই বলা যায় তাল দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

পাকা তালের মাধ্যমে যেসব খাবার তৈরি করা যায়

বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলের দিকে তালের গাছের সংখ্যা অনেক বেশি। শহরে তো তেমন তালের কোন গাছে নেই। তাই তাল দিয়ে যে সকল খাবার তৈরি করা সম্ভব। সেটি গ্রামঅঞ্চলেই বেশি হয়ে থাকে। গ্রাম অঞ্চলের মানুষেরা অনেক বেশি কারিগরি। তারা তাল দিয়ে বিভিন্ন রকমের জিনিস তৈরি করতে পারে। যেগুলোর মধ্যে কয়টি আমরা নিচে উল্লেখ করলাম।
তালের পিঠা এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। এটি পাকা তালের রস দ্বারা গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষেরা বানিয়ে থাকে। তালের বড়া এটিও একটি খুবই সুস্বাদু খাবার যা তাল দিয়ে তৈরি করা হয়। গ্রামের মানুষেরা তালের রুটিও তৈরি করে। এছাড়াও অঞ্চল ভেদে তালের বিভিন্ন রকম আলাদা আলাদা খাবার তৈরি হয়। 
যেমন তালের মালপোয়া এটি একটি সুস্বাদু খাবার যেটি তাল দিয়ে তৈরি হয়। এছাড়াও তালের ক্ষীর,তালের কেক তৈরি করা হয় বিভিন্ন অঞ্চলে। তাল অনেক সুস্বাদু খাবার। এটিতে অনেক ধরনের ভিটামিন রয়েছে। এটি আমাদের শরীরকে অনেকভাবে পুষ্টি প্রদান করে এবং আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

তালের শাসে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে

তালে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে। এটি একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। জেটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। এটি আমাদের শরীরকে বিভিন্ন দিক দিয়ে সহযোগিতা করে টিকে থাকার জন্য। প্রথমে যেখানে বলেছি তালে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ধারণা থেকে জানা গিয়েছে তালের শাসে প্রায় ৮০ শতাংশ পানি থাকে। 
এছাড়াও তালের শাঁসে আরো রয়েছে ভিটামিন এ,ভিটামিন বি,ভিটামিন সি,প্রোটিন,কার্বোহাইড্রেট,ফ্যাট রয়েছে। এছাড়াও তালের শাঁসে বিভিন্ন রকম খনিজ উপাদান যেমন পটাশিয়াম,ম্যাগনেশিয়ান,আয়রন,ফসফরাস,ক্যালসিয়াম ইত্যাদি ও রয়েছে। 
এছাড়াও তালের শাঁসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যেগুলো আমাদের শরীরের অনেক বড় বড় রোগ প্রতিরোধ করতে ভূমিকা রাখে।

তালের শাসে যেসকল উপকারিতা রয়েছে

  • তালের শাঁসে প্রচুর পরিমাণে আন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। ছাড়াও এটিতে ভিটামিন সি রয়েছে যার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে তালের শাঁস ভূমিকা রাখে।
  • তাল একটি আঁশ জাতীয় খাবার হওয়ায়। পাকস্থলীর বিভিন্ন রকম সমস্যা দূর হয়। হজম শক্তি আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়।
  • অতিরিক্ত গরমের কারণে শরীরে ক্লান্তি ভাব চলে আসলে। তালের শাঁস খেলে সেটি শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে। ফলে শরীর অনেক সুস্থ এবং স্বতেজ থাকে।
  • অতিরিক্ত গরমের কারণে ত্বক অনেক সময় অতিরিক্ত শুষ্ক হয় পরে। তালে যে সকল ভিটামিন জাতীয় উপাদান রয়েছে। সেগুলো ত্বকের এই সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
  • তালে ফাইবার এবং প্রায় ৮০% পানির উপস্থিতি রয়েছে। যে কারণে এটি খেলে অনেকক্ষণ যাবৎ পেট ভরে থাকে। এছাড়াও এটি আমাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি হাওয়া রোধ করে।
  • যাদের গা ঘাটে,বা বমি বমি ভাব হয়,মাথা ঘোরে। তারা যদি নিয়মিত তালের শাঁস খায়। তাহলে তারা এই সমস্যা থেকে খুব দ্রুত মুক্তি পাবে।
  • এছাড়াও যাদের চুল পড়া নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তাদের জন্য এটি স্মার্ট একটি সমাধান হতে পারে।
  • শরীরের পানি শূন্যতা,রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে তালের শাস।

তালের রসে যেসব উপকারিতা রয়েছে

  • যাদের অনেকদিন ধরে কাশি রয়েছে। তারা নিয়মিত তিন থেকে চার চামুচ তালের রসের সাথে সামান্য দুধ মিশিয়ে খেলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে।
  • বুকে যাদের বিভিন্ন রকম জ্বালাপোড়া রয়েছে। নিয়মিত ২-৩ চামুচ তালের রস খায় তাহলে এটি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভাবনা অনেক বেশি।
  • আমাদের শরীরে অনেক সময় শ্বেতপদরের দেখা দেয়। যেটি থেকে মুক্তি পেতে তালের রস যথেষ্ট কার্যকরী। যদি কেউ টাটকা তালের রস সকাল বিকাল ২বার খায়। তাহলে তার এটি থেকে খুব দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
  • তালের শাঁসে প্রচুর পরিমাণে আন্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। যেহেতু এন্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের দূর করতে ভূমিকা রাখে। তাই এটি খেলে ক্যানসারের রোগ প্রতিরোধ হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বৃদ্ধি পায়।
  • বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে যাদের বয়স বার্ধক্যে চলে গিয়েছে। তারা অনর্গল কথাবার্তা বলতেই থাকে। বয়সের সাথে সাথে মানুষের বিবেক-বুদ্ধি অনেকটাই কমে যায়। তাই অনেক ধরনের সমস্যা সেই বয়সে দেখা দেয়। তাল খেলে যাদের এই সমস্যাটি রয়েছে সেটি থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
  • যাদের রাতে ঘুম হয় না। ঘুম জনিত যে সকল সমস্যা রয়েছে সেটি থেকে মুক্তি পেতে তালের রস ব্যাপক কার্যকরী ভূমিকা প্রদান করে।
  • কৃমির সমস্যা কমবেশি আমাদের সকলেরই রয়েছে। এটি পেটের ভেতরের কার্যক্রম গুলোকে তাদের কাজ করতে বাধা প্রদান করে। তালের রস খেলে এ সমস্যা থেকেও খুব সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
  • তালের শাঁসে ক্যালসিয়াম থাকায় এটি দাঁতের ব্যথা,দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়া ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।

তালের যে সকল অপকারিতা রয়েছে

তাল যেমন আমাদের শরীরকে অনেকভাবে উপকারিত করে। তেমনি তাল যদি কেউ অতিরিক্ত খেয়ে ফেলে। এটি তার ওপর অনেক খারাপ ভাবে তখন খেলতে পারে। যেকোনো জিনিসই আমাদের শরীরের জন্য অতিরিক্ত পাওয়া খুবই ভয়াবহ হতে পারে। তালে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে যাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। 
তারা যদি অতিরিক্ত তাল খেয়ে ফেলে। তাহলে তাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। এছাড়াও কেউ যদি অতিরিক্ত তালের শাঁস খেয়ে ফেলে। সেটির কারণে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্ন বেড়ে যেতে পারে। শরীরে গ্যাসের সমস্যার ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। সব সময় চেষ্টা করতে হবে তাল খাওয়ার তবে সেটি সীমিত পরিমাণে।

শেষ কথা

আমরা আমাদের উপরের আর্টিকেলে তালের শাসে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে-তাল খাওয়ার যেসব উপকারিতা রয়েছে আলোচনা করেছি। আপনাদের যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি পরে ভালো লেগে থাকে। তাহলে এটি আপনারা আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করুন। এবং কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন

comment url