আমড়া খাওয়ার ৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতা-আমড়ার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন

চুলের যত্নে আমলকির ব্যবহারসুস্বাদু এ ফলটি সকলের কাছে অনেক জনপ্রিয় না হলেও এটির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সকলের আরো বিস্তারিত জানা উচিত। আমরা আমাদের নিচের আলোচনায় আমড়া খাওয়ার ৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতা-আমড়ার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন তা নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা চাইলে সেটি পড়ে আসতে পারেন।
আমরা সেখানে আমড়া খাওয়ার ৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতা-আমড়ার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন এটি ছাড়াও ছাদ বাগানে আমড়ার চাষ এবং আমড়া অতিরিক্ত খেলে কি হয় সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

ভূমিকা

ভিটামিন সি জাতীয় এই ফলটি অনেকের কাছেই অনেক জনপ্রিয়। বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই ফলটি সকলেরই খাওয়া উচিত। অনেকেই এখনো জানেনা আমড়াতে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে এবং আমড়া খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়। আমরা আমাদের নিচের আর্টিকেলে আমড়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা চাইলে আমাদের নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন। এটি আপনাদের আমড়া সম্পর্কীত জ্ঞানকে আরো সমৃদ্ধ করবে।

আমড়ার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন

সকলের কাছেই সুপরিচিত এবং জনপ্রিয় একটি ফল হল আমড়া। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এ ফলটি সকলের কাছেই অনেক পছন্দের। এটিতে অনেক ধরনের পুষ্টি উপকরণ রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি,ক্যালসিয়াম,পটাশিয়াম।
ম্যাগনেসিয়াম,ভিটামিন এ,ভিটামিন বি,ভিটামিন ই,আয়রন,লৌহ এবং প্রচুর পরিমাণে মিনারেল পাওয়া যায়। যেগুলো আমাদের শরীরের ভিটামিন,খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে যে একটি আমড়াতে দুটি আপেলের চেয়ে বেশি ভিটামিন পাওয়া যায়। আমড়া প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। 
আমাদের সকলেরই নিয়মিত আমড়া খাওয়া উচিত। এটি আমাদের শরীরের অনেক ভিটামিন এবং খনিজের অভাব খুব সহজেই পূরণ করে।

আমড়া খাওয়ার ৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

  • নিয়মিত আমড়া খেলে হার্ট অনেক পরিষ্কার থাকে। আমড়াতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেটি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলগুলোকে নষ্ট করে হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • অনেকেরই লক্ষ্য করা যায় খুব ঘন ঘন বদ হজম করে। এদের মূল কারণ হলো পেটে গ্যাস হওয়া। নিয়মিত আমড়া খেলে এটিতে ফাইবার থাকায় পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
  • বরাবরের মতোই আমড়াতে ক্যালসিয়াম থাকায় এটি হাড় এবং দাঁতের গঠনে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি এটি হাড় এবং দাঁতকে মজবুত রাখতে সাহায্য করে। অনেকের দাঁত শিরশির অথবা দাঁতের গোড়ায় ব্যথা জাতীয় সমস্যা থাকে। যদি নিয়মিত আমড়া খায় তাহলে এ সমস্যা থেকে খুব সহজে মুক্তি পাবে।
  • আমড়া একটি আশ জাতীয় ফল হওয়ার কারণে খুব সহজেই এটি হজম হয়। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে আমড়াতে। যার কারণে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
  • জ্বর-সর্দি এবং কাশ খুব সহজেই আমাদের শরীরকে অ্যাটাক করে। এসব ছাড়াও অনেক রকম ভাইরাস রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রকার ক্ষতি করে। নিয়মিত আমড়া খেলে বিভিন্ন রকম জীবাণু এবং ভাইরাস থেকে আমাদের শরীরকে খুব সহজেই মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
  • আমড়াতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। যেটি শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাকে ঠিক রাখার মাধ্যমে শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
  • আমড়াতে এক ধরনের উপাদান রয়েছে। এটার কারণে আমড়া খেলে মুখের রুচি বাড়ে এবং ক্ষুধা পূর্বের তুলনায় অনেক বেড়ে যায়।

আমরা অতিরিক্ত খেলে কি হয়

সকলের উচিত যে কোন জিনিস সামান্য পরিমাণে খাওয়ার। অতিরিক্ত কোন কিছুই কখনো ভালো কিছু নিয়ে আসে না। আমড়া অতিরিক্ত খেলে এটির অনেক খারাপ প্রভাব আমাদের শরীরে পড়ে। তাই আমাদের সকলের উচিত আমড়া পরিমিত পরিমাণ খাওয়া। আমড়ার খুব একটা অপকারিতার লক্ষ্য করা যায় না। তবে আমড়া খাওয়ার ক্ষেত্রে সকলেরই আরো বেশি সজাগ হওয়া উচিত।
  • আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায়। কেউ যদি আমড়া অতিরিক্ত পরিমাণে খায়। তাহলে তার বদহজমের সমস্যা হতে পারে।
  • আমড়াতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যেটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে এটি আবার অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হওয়ার কারণে শরীরের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে।
  • যাদের পেটে গ্যাস জাতীয় সমস্যা রয়েছে। এটি যদি তারা আবার অতিরিক্ত পরিমাণে খায় তাহলে তাদের পেট জ্বালাপোড়া করতে পারে।
  • আমড়াতে যথেষ্ট পরিমাণে মিনারেল রয়েছে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে আমড়া আমাদের না খাওয়াই উচিত। শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ মিনারেল প্রবেশ করালে অতিরিক্ত প্রস্রাব করার মত অসুবিধায় পড়তে পারে।
  • আমড়াতে খুব সামান্য পরিমাণে ক্যালোরি থাকলেও অতিরিক্ত আমড়া খাওয়ার ফলে শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বৃদ্ধি হলে। তাতে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।

ছাদ বাগানে আমড়ার চাষ

যারা ছাদ বাগান করেন তাদের জন্য এটি অনেক শখের একটি জিনিস। বিশেষ করে যারা শহরে বসবাস করেন। খুব বেশি একটা জায়গা না থাকার কারণে তারা ছাদ বাগান করে থাকেন। ছাদ বাগানে লাগানোর জন্য খুব ভালো একটি ফলের গাছ হল আমড়া। বর্তমান সময়ে আমড়ার বিভিন্ন জাত বাজারে পাওয়া যায়। 
তবে ছাদ বাগানে বারোমাসি একটি আমড়ার গাছ লাগানো সবচেয়ে ভালো। কেননা তাহলে সারা বছর খুব সহজেই আমড়ার অভাব পূরণ করা সম্ভব। আমড়াতে অনেক ধরনের ভিটামিন রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যদি কেউ তার ছাদ বাগানে আমড়া গাছ লাগায়। 
তাহলে তার ভিটামিন,খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টদের অভাব পূরণের পাশাপাশি একটি টাটকা ফলের যোগান দেবে আমড়া গাছটি। তাই যারা চিন্তা-ভাবনা করছেন ছাদ বাগান করার অথবা চিন্তা করছেন ছাদ বাগানে কি গাছ লাগাবেন। তাদের জন্য খুব সহজ একটি সমাধান হতে পারে আমড়া গাছ। খুব সাধারনভাবে ছাদে একটি টবের ভেতরে আমড়ার গাছ লাগালেই হয়। 
খুব বেশি যত্নের প্রয়োজন নেই অথবা খাবার দেয়ার প্রয়োজন হয় না এই গাছে। আমড়াতে সামান্য পানি এবং যত্ন নিলেই। গাছ লাগানোর ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যেই ফল পাওয়া যায়। সকলের উচিত ছাদ বাগানে একটি হলেও আমড়া গাছ লাগানো।

আমড়া চাষে বাংলাদেশ

আমাদের দেশে আমড়া চাষের প্রচলন খুব একটা না থাকলেও। অনেকেই তাদের উঠানে আমড়ার একটি গাছ লাগানোর চেষ্টা করে। আমড়া সব থেকে ব্যবহার বেশি লক্ষ্য করা যায় রাস্তাঘাটের বিভিন্ন হকারদের কাছে। তারা তাদের জীবন পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশন,বাস স্টেশন ইত্যাদি জায়গাগুলোতে আমড়া বিক্রি করে তাদের জীবন পরিচালনা করে। 
তবে বর্তমান সময়ে এসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হাইব্রিড আমড়া চাষের পরিমাণ পূর্বের তুলনায় অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। আমড়া বারোমাসি একটি ফল যে কারণে এটি সব সময় বাজারে পাওয়া যায়। অনেক ধরনের পুষ্টি সম্পন্ন এ ফলটি সকলের কম-বেশি খাওয়া উচিত। বাংলাদেশ আমড়া চাষে খুব একটা এগিয়ে না থাকলেও অনেক যে পিছনে রয়েছে এমন কেউ নয়। 
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি আমড়া চাষ হয় দক্ষিণাঞ্চলের জেলা কুষ্টিয়াতে। তবে সময়ের সাথে সাথে দেশের বিভিন্ন জেলাতে আমড়া চাষের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শেষ কথা

আমরা আমাদের নিচের আলোচনায় আমড়া খাওয়ার ৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতা-আমড়ার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন এবং ছাদ বাগানে আমড়ার চাষ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনাদের যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে। তাহলে আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করুন। এবং আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন

comment url