চুলের যত্নে জলপাইয়ের তেল-জলপাইয়ে যে ৮টি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যাবে
আমড়া খাওয়ার ৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতাবিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই ফলটি আমাদের দেশের মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয়।
আমরা আমাদের নিচের আলোচনায় চুলের যত্নে জলপাইয়ের তেল-জলপাইয়ে যে ৮টি স্বাস্থ্য
উপকারিতা পাওয়া যাবে সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা চাইলে নিচে
থেকে সেটি পড়ে আসতে পারেন।
আমরা সেখানে চুলের যত্নে জলপাইয়ের তেল-জলপাইয়ে যে ৮টি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া
যাবে এটি ছাড়াও জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
করেছি।
ভূমিকা
জলপাই তেল অনেক চিকিৎসক খাবার তেল হিসেবে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এটির
সবচেয়ে বড় কারণ হলো জলপাইয়ের বিভিন্ন রকম পুষ্টিগুণ। যেটির কারণে ডাক্তারেরা
জলপাই তেল খাবার তেল হিসেবে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পুষ্টি জাতীয়
ফলটিতে অনেক ভিটামিন,খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
যেগুলো আমাদের শরীরের অনেক ধরনের উপকার করে থাকে। তাই আমাদের সকলের উচিত নিয়মিত
জলপাই খাওয়া। অবাক হলেও সত্য যে আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষজন জলপাইয়ের
পুষ্টিগুণ এবং জলপাইয়ের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানেনা। তবে নিশ্চয়ই তাদের
জলপাইয়ের উপকারিতা সম্পর্কে জানা উচিত।
আমরা আমাদের নিচের আর্টিকেলে জলপাইয়ের বিভিন্ন দিক সহ চুলের যত্নে জলপাইয়ের
তেল-জলপাইয়ে যে ৮টি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যাবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
করেছি। আপনারা চাইলে সেটি পড়ে আসতে পারেন।
জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন
জলপাই অনেক পুষ্টি সম্পন্ন একটি ফল। এ ফলটি দ্বারা অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যায়।
জলপাইয়ে যে সকল পুষ্টিগণ রয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো। জলপাইয়ে
সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ক্যালোরি,শর্করা,ক্যালসিয়াম,ভিটামিন সহ আরো অনেক ধরনের
উপাদান। জলপাইয়ে আন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ যে সকল পুষ্টিগুণ রয়েছে লটকনে
যেটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকরী ভূমিকা
রাখে। এছাড়াও জলপাইয়ে বিভিন্ন রকম খনিজ পদার্থ যেমন
ক্যালসিয়াম,পটাশিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,আয়রন পাওয়া যায় যথেষ্ট পরিমাণে। নিয়মিত
জলপাই খেলে হৃদরোগের বিভিন্ন রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কাঁচা জলপাইয়ে অনেক ধরনের পুষ্টির উপকারিতা রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরকে
প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভিটামিনের যোগান দিয়ে আসছে। আমাদের সকলেরই উচিত যে সময়ে
জলপাই পাওয়া যায় তখন এটি পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া।
জলপাইয়ে যে ৮টি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যাবে
আমাদের দেশের প্রায় সকল অঞ্চলেই জলপাইয়ের গাছ পাওয়া যায়। মৌসুমী এ ফলটি কমবেশি
সকলের কাছেই জনপ্রিয়। ত্বক জাতীয় এই ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া
যায়। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ জাতীয় উপাদান রয়েছে জলপাইয়ে।
যেটি আমাদের শরীরের অনেক ধরনের উপকার করে। জলপাই খেলে যে সকল উপকারিতা পাওয়া
যায়। সেগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
- জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। যেটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকাতে। এটি শরীরের খারাপ কলেস্টেরলগুলোকে দূর করে এবং ভালো কলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়।
- জলপাইয়ে ভিটামিন ই এর পরিমাণ অনেক থাকে। যার ফলে এটি শরীরের ক্যান্সারের কোষগুলোকে নষ্ট করতে ভূমিকা রাখে। যার ফলে নিয়মিত জলপাই খেলে ক্যান্সার না হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
- বয়সের সাথে সাথে হাড়ের ক্ষয় অনেক স্বাভাবিক একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেরই এটি একটি জটিল সমস্যা। এ সমস্যা থেকে খুব সহজে মুক্তি পেতে হলে নিয়মিত জলপাই তেল ব্যবহার করা উচিত।
- জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। যেটির চোখের দৃষ্টিশক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যাদের চোখে সমস্যা রয়েছে। তাদের নিয়মিত জলপাই খাওয়া উচিত।
- চিকিৎসকেরা নিয়মিত জলপাই তেল খাওয়ার পরামর্শ দেন। নিয়মিত জলপাই তেল খেলে এটি হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- জলপাই পেটের গ্যাসের সমস্যা দূর করতে ভূমিকা রাখে। তাই যাদের পেটে গ্যাস এবং আলসারের সমস্যা রয়েছে। তারা নিয়মিত জলপাই অথবা জলপাই তেল খেতে পারেন।
- বর্তমান সময়ে চুলের যত্নে জলপাই তেলের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। এটি চুলের গোড়াকে শক্ত এবং চুলকে বিভিন্ন রকম ভিটামিনের যোগান দিতে সাহায্য করে।
- উপরিউক্ত উপকারিতাগুলো ছাড়াও জলপাইয়ের আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। তাই আমাদের সকলেরই কমবেশি মৌসুমী এ ফলটি খাওয়া উচিত। এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানের অভাব পূরণ করতে ভূমিকা রাখে।
জলপাইয়ের আচার একটি মুখরোচক খাবার
জলপাই ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অনেক পছন্দের একটি ফল। মৌসুমী ফলটি অনেকটা টক
জাতীয় হওয়ার কারণে মেয়েদের কাছে এ ফলটি অনেক জনপ্রিয়। অঞ্চলভেদে জলপাই অনেক
ভাবে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। তবে সকল অঞ্চলেই জলপাইয়ের আচার বানানোর একটি
সংস্কৃতি রয়েছে।
সকলেই জলপাইয়ের মৌসুমের চেষ্টা করে একটু হলেও জলপাই আচার তৈরি করে সেটিকে
সংরক্ষণ করে রাখা। জলপাইয়ের আচার বানানোর জন্য সর্বপ্রথম জলপাইটিকে গাছ থেকে
পেড়ে নিতে হবে। তারপর সেটিকে গরম পানিতে সেদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর এটির সাথে
বিভিন্ন রকম মসলা মিশিয়ে। অনেকক্ষণ যাবৎ রান্না করতে হবে।
তারপরেই তৈরি হয়ে যায় সুস্বাদু এই জলপাইয়ের আচারটি। এটি মুখের রুচি বাড়াতে
অনেকটা সাহায্য করে। গরম ভাতের সাথে জলপাইয়ের আচার অসাধারণ একটি কম্বিনেশন।
গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে জলপাইয়ের আচার অনেক পছন্দের একটি খাবার। বর্তমান
সময়ে জলপাইয়ের আচার একটি ব্যবসায়িক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
তাই সকলেরই উচিত জলপাইয়ের মৌসুমী সামান্য হলেও জলপাইয়ের আচার তৈরি করা। এটি অনেক
সুস্বাদু এবং মুখরোচক একটি খাবার।
চুলের যত্নে জলপাইয়ের তেল
জলপাই অনেক পুষ্টি সম্পন্ন ফল হলেও এটি পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই কম-বেশি উৎপাদন
হয়। জলপাই তাই সকল দেশেই সবচেয়ে বেশি তেল উৎপাদনের জন্য চাষ করা হয়। বিশেষ করে
ইউরোপের দেশগুলোতে অনেক বড় আকারের জলপাই বাগান রয়েছে। যেগুলো শুধু চাষ করা হয়
জলপাইয়ের তেল তৈরির জন্যই।
জলপাইয়ের তেলের অনেক উপকারিতা রয়েছে তার মধ্যে চুলের যত্নে এই তেলের ব্যবহার
সবচেয়ে বেশি হয়। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সকল দেশেই জলপাই তেলের ব্যবহার চুলের জন্য
সবচেয়ে বেশি। এটিতে অনেক উপাদান রয়েছে যেগুলোর মধ্যে ভিটামিন বি,ভি্টামিন
ই,ভিটামিন সি,ক্যালসিয়াম,পটাশিয়াম যেগুলো চুলকে মজবুত করে।
চুলে বিভিন্ন রকম পুষ্টির যোগান দিতে সাহায্য করে। যাদের নিয়মিত চুল পড়ার
সমস্যা রয়েছে। চিকিৎসকেরা তাদের জলপাইয়ের তেল ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এটি চুলের
পাশাপাশি ত্বকের জন্য অনেক স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টি সম্পন্ন একটি উপাদান। তাই বলা
যায় চুলের যত্নে জলপাই তেলের উপকারিতা সবচেয়ে বেশি।
ত্বকের যত্নে জলপাই তেলের ব্যবহার
আমরা উপরের আলোচনা থেকে জেনেছি যে,জলপাই তেল চুলের জন্য অনেক পুষ্টি সম্পন্ন একটি
উপাদান। জলপাই তেল চুলের পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও অনেক কার্যকরী। এটিতে রয়েছে
ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই ও ভিটামিন সি যেটি ত্বকের বিভিন্ন রকম কালো দাগ দূর করতে
সাহায্য করে। অনেকেরই চোখের নিচে কালো দাগ লক্ষ্য করা যায়।
নিয়মিত কেউ যদি জলপাইয়ের তেল ত্বকে ব্যবহার করতে পারে। তাহলে খুব সহজেই ত্বকের
কালো স্পটগুলো দূর করা সম্ভব। এছাড়াও নিয়মিত জলপাই তেল ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বক
অনেকটা উজ্জ্বল এবং সতেজ থাকে। নিয়মিত জলপাই তেল ত্বকের যত্নে ব্যবহার
করলে।
এটি ত্বকের বার্ধক্যতা দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে সতেজ দেখায়। তাই যাদের
ত্বকে বিভিন্ন রকম সমস্যা রয়েছে তাদের নিয়মিত জলপাই তেল ব্যবহার করা উচিত।
জলপাইয়ের বাণিজ্যিক চাষ
আমাদের দেশের জলপাই চাষের খুব একটা আগ্রহ নেই মানুষের। আগ্রহ না থাকার পেছনের মূল
কারণ হলো জলপাই কেনার মত সেরকম কোন বড় কোম্পানি নেই আমাদের দেশে। তবে সবচেয়ে
বেশি জলপাইয়ের চাষ হয় ইউরোপে। তাদের অনেক বড় বড় জমিতে তারা জলপাইয়ের চাষাবাদ
করে।
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় সফেদা খাওয়ার উপকারিতা
মূলত তাদের উন্নত চাষাবাদ এবং প্রযুক্তির কারণে তাদের দেশে জলপাইয়ের চাষাবাদ
অনেক ভালো হয়। এছাড়াও তাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের কলকারখানা রয়েছে। এখান থেকে
খুব সহজেই জলপাইকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়। তবে সময়ের সাথে সাথে
আমাদের দেশেও জলপাই চাষের আগ্রহ পূর্বের তুলনায় অনেকটাই বাড়ছে।
যার ফলে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে এবং পূর্ব অঞ্চলের অনেক জায়গা গুলোতে মানুষের জলপাই
চাষের আগ্রহ অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের আরো বেশি জলপাই চাষের প্রতি আগ্রহ
দেখানো উচিত। তাতে করে জলপাই আমাদের দেশের অর্থনীতিতে আরো ভালোভাবে প্রভাব ফেলাতে
পারবে।
শেষ কথা
আমরা আমাদের উপরের আলোচনায় চুলের যত্নে জলপাইয়ের তেল-জলপাইয়ে যে ৮টি স্বাস্থ্য
উপকারিতা পাওয়া যাবে এবং জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন সেটি সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনাদের যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে। তাহলে
আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করুন। এবং আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে
পারেন আপনাদের মতামত।
আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন
comment url