বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান-বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি

রূপচর্চায় আলুর ১০টি ব্যবহারনিজের জন্মভূমিকে ভালোবাসা এটি ঈমানের অঙ্গ। । যারা আমাদের জন্মভূমিকে স্বাধীন করতে শহীদ হয়েছিলেন। আমরা তাদেরকে অনেক শ্রদ্ধা এবং সম্মান জানাই। আপনারা যারা সম্পর্কে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান-বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি বিস্তারিত জানতে চান। তারা আমাদের নিজের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।
আমরা সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান-বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি ছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের পটভূমি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

ভূমিকা

সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের এই জন্মভূমি সকলের কাছেই অনেক প্রিয়। সকলেই তার জন্মভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসে। তবে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে অনেক আন্দোলন,মিছিল,মিটিং এবং যুদ্ধ করতে হয়েছে। প্রায় ৭ লক্ষ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের মাতৃভূমিকে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক স্বাধীন করতে পেরেছিলাম। 
আপনারা যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান-বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। আমাদের নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।

স্বাধীনতা দিবস কত তারিখে পালন করা হয়

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ২৬ শে মার্চকে পালন করা হয়। দীর্ঘ ২৩ বছর পাকিস্তান সরকারের কাছে বাংলাদেশ শাসন এবং নিপীড়ন হওয়ার পর। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা লাভ করে। মূলত বাংলাদেশের মানুষজন পাকিস্তান সরকারের বিভিন্ন সময়ের অত্যাচারের উপরে খুবই বিরক্ত হয়ে। 
বিভিন্ন সময় অনেক আন্দোলন মিছিল করে। যার ফলশ্রুতিতে সময়ের সাথে সাথে এ আন্দোলনগুলো গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়েছিল। এক সময় এসে বাংলার মানুষজন পাকিস্তান সরকার থেকে নিজেদের স্বাধীন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। আর ঠিক তখনই পাকিস্তান সরকার ২৫ শে মার্চ মধ্যরাতে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানের নিরীহ মানুষদের মারতে থাকে। 
যার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীনরাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে দেয়। সেদিন থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। 
যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য তাদের জীবনকে উৎসর্গ করেছিল। আমরা প্রত্যেক বছর ২৬ শে মার্চ সে সকল শহীদদের স্মরণ এবং শ্রদ্ধা করি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের পটভূমি

১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ভাগ এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পশ্চিম পাকিস্তানের একটি প্রদেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পূর্বে ব্রিটিশরা প্রায় ২০০ বছর ভারত বর্ষ শাসন করেছে। বাংলাদেশ প্রায় বহুবছর যাবত বিভিন্ন উপনিবেশিক শাসনের দ্বারা শাসিত হয়েছে। পাকিস্তান সরকার সব সময় পূর্ব পাকিস্তানের মানুষজনদের উপর নিপীড়ন চালাতো।
পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী সব সময় পূর্ব পাকিস্তানের মানুষজনদের উপর সবকিছু চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করত। আর্থিক।,সংস্কৃতিক সকল দিক দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের তুলনায় অনেক উন্নত ছিল। রাজনৈতিক দিক দিয়েও সবসময় পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হত।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে আইয়ুব খান তার দশ বছরের সামরিক শাসন শেষ করে ক্ষমতা থেকে অব্যাহতি নিয়েছিল। তারপরে ক্ষমতায় আসে ইয়াহিয়া খান। তিনি আসার পরে পূর্ব বাংলার মানুষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামীলীগ ১৬৭ টি আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। 
তারপরে আওয়ামীলীগ যখন সরকার গঠন করতে চায়। তখন পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাত দেখায়। সময়ের সাথে সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিভিন্ন বৈঠকে ডাকা হলেও কোন সমাধান না আসায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চের ভাষণে বাংলার মানুষ জনকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন। 
এত কিছুর মধ্যেও পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষদের উপর অত্যাচার চালাতে থাকে। ৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীরা ঢাকার বিভিন্ন স্থান সহ দেশের বড় বড় শহরগুলোতে নিরীহ মানুষজনদেরকে মারে। যার কারণে পুরো দেশের মানুষ পাকিস্তান সরকারের উপর বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন রাতেই বাংলাদেশকে স্বাধীন হিসেবে ঘোষণা করে দেয়। এবং সকলকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানায়।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি

প্রায় ৮ লক্ষ মানুষের বুকের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ আজকে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনেক অবদান রয়েছে। পাশাপাশি অবদান রয়েছে বাংলাদেশের সকল মানুষ যারা মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পটভূমি শুরু হয়েছিল সেই ১৯৪৭ সালেই। 
পাকিস্তান সরকার সব সময় পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের উপর যেভাবে পেরেছে নিপীড়ন চালিয়েছে। পাকিস্তান সরকারের বিভিন্ন সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষদের উপর যে শোসন চালিয়েছিল। সেটির কারণে বাঙ্গালীদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষজন প্রত্যেকবারই চেয়েছে পশ্চিম পাকিস্তান আলাদা স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র হোক। 
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ মধ্যরাতের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছিল। এ মুক্তিযুদ্ধের দেশের সকল স্তরের মানুষজন অংশগ্রহণ করেছিল। কেউবা প্রত্যক্ষ আবার কেউ বা পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বলা হয়। এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিল। তিনি তার জীবদ্দশায় প্রায় ২৭ বছর বিভিন্ন জেলে কাটিয়েছেন। বরাবরের মতোই তিনি বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৬৬ সালের ছয় দফা দাবি। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে এটি কে বাঙালির ম্যাগনাকার্টা বলা হয়। এই ছয়দফাতে সে সময় বাঙ্গালীদের সকল আবদার তুলে ধরেছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এছাড়া ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনেও তার যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। 
১৯৬৬ এর ছয় দফা দাবির বাংলার মানুষ বিভিন্ন আন্দোলনের ফেটে পড়ে তাদের দাবি আদায়ের জন্য। এ আন্দোলনটি পরে ১১ দফায় পরিণত হয়। যার ফলে আন্দোলনটি আরো তীব্র আকার ধারণ করে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়। তারপর পাকিস্তান সরকার বাধ্য হয়ে প্রাদেশিক নির্বাচন দিতে। 
সে নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ১৬৭ টি আসনে জয়লাভ করেছিল। তারপরে পশ্চিম পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। যার কারণে বাংলার মানুষ জন স্বাধীনতার প্রতি আরো জোর দাবি তোলে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে প্রভাবশালী ভূমিকা হল ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণ। 
তিনি এই ভাষণটি বাংলার মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি এবং স্বাধীনতার প্রতি এতটাই আকৃষ্ট করেছিল যে এজন্য এটিকে পৃথিবীর প্রভাবশালী ভাষণগুলোর মধ্যে একটি বলা হয়। সর্বোপরি বলা যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের জন্য তা সারাটি জীবন শেষ করেছে। তার অবদান বাঙালিরা এবং বাংলাদেশ কখনোই ভুলবে না। এজন্যই তো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের জাতির জনক বলা হয়। তাকে বলা হয় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারতের অবদান

ভারত বরাবরের মতোই বাংলাদেশকে বিভিন্ন খারাপ সময় সাহায্য করেছে। পাকিস্তানের সাথে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক সবসময়ই খুবই খারাপ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত প্রায় ২ কোটি বাংলাদেশী শরণার্থীদের তাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ভারত সরকার। 
বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে ভারত সরকার। তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক থাকায়। ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাহায্য করার জন্য পাঠায়। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসের দিকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল দিয়ে ভারতের সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রবেশ করে। 
পাকিস্তান সেনাবাহিনীদের সাথে যুদ্ধ করেছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং মুক্তিবাহিনী একত্রিত হয় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বড় বড় সামরিক ঘাঁটিকে নষ্ট করেছিল। এছাড়াও বাংলাদেশকে স্বাধীনতা সময় যত ধরনের সহায়তা সম্ভব সবকিছু করার চেষ্টা করেছে ভারত সরকার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেছে ভারত সরকার। 
শুধু মুক্তিযুদ্ধের সময় নয় মুক্তিযুদ্ধের শেষ হওয়ার পরে ভারত সরকার আজ পর্যন্ত বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে আসছে। দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করেছিল একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পরেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন পাকিস্তানের কারাগারে ছিল। 
সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বের করাতেও ভারত সরকারের যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। তাই বলা যায় ভারত সরকার বরাবরই বাংলাদেশের জন্য একটি বন্ধু রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত সরকার বাংলাদেশকে স্বাধীনতা অর্জনে অনেকটাই সাহায্য করেছিল।

শেষ কথা

আমরা আমাদের উপরের আলোচনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান-বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনাদের যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে। তাহলে আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করুন। এবং আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন

comment url