১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের কালোরাত্রি-বাংলাদেশের স্বাধীনতায় যেসকল রাষ্ট্র সাহায্য করেছে
পেয়ারা পাতা খেলে যেসব উপকার পাওয়া যায়বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা সংসদীয়।
বাংলাদেশের আইনসভা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট একটি আইনসভা। আপনারা যারা ১৫ই আগস্ট
বাংলাদেশের ইতিহাসের কালোরাত্রি-বাংলাদেশের স্বাধীনতায় যেসকল রাষ্ট্র সাহায্য
করেছে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। তারা আমাদের নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে
পারেন।
আমরা সেখানে ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের কালোরাত্রি-বাংলাদেশের স্বাধীনতায়
যেসকল রাষ্ট্র সাহায্য করেছে ছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভাষা আন্দোলনের
ভূমিকা এটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
ভূমিকা
বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক নেতাকর্মী থেকে
শুরু করে সাধারণ মানুষজন তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের প্রতি আমরা সব সময়
বিনম্র শ্রদ্ধা এবং সম্মান প্রদর্শন করি। বাংলাদেশের স্বাধীনতাতে সবচেয়ে বেশি
অবদান রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। আপনারা যারা সম্পর্কে বিস্তারিত
জানতে চান। তারা আমাদের নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতায় যেসকল রাষ্ট্র সাহায্য করেছে
বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাতে বিভিন্ন দেশের অবদান
রয়েছে। বাংলাদেশ ২৪ বছর পাকিস্তান সরকারের শাসন এবং নিপীড়নের শিকার হয়ে ১৯৭১
সালের ১৬ই ডিসেম্বর একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭১
সালের মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে ভারত সরকার।
আরও পড়ুনঃ রূপচর্চায় আলুর ১০টি ব্যবহার
তারা প্রায় ২ কোটি মানুষকে তাদের দেশে শরণার্থী হিসেবে জায়গা দিয়েছিল। এছাড়া
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে ভারত সরকার বাংলাদেশের
স্বাধীনতায় ভূমিকা রেখেছিল ১৯৭১ সালে। এছাড়াও সে সময় বাংলাদেশকে রাশিয়া
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দিকে সাহায্য করেছিল।
সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান সরকারকে সাপোর্ট করেছিল ১৯৭১ সালের
মুক্তিযুদ্ধে। এছাড়াও আশেপাশের অনেক দেশ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য
করেছিল। ভুটান প্রথম দেশ যে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে
স্বীকৃতি দিয়েছিল।
বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভাষা আন্দোলনের ভূমিকা
বাংলাদেশের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন কবি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন। যেটি বাঙালি জাতিকে
তাদের জাতীয়তাবাদ চেতনার আলোচনা করতে সাহায্য করেছিল। এটি বাঙালি জাতির প্রথম
কোন আন্দোলন যেটি পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়েছিল। মূলত ১৯৪৭ সালের
দেশভাগের পর থেকেই।
পাকিস্তান সরকার পুরো পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ জনের উপর বিভিন্ন জিনিস চাপিয়ে
দেওয়ার চেষ্টা করে আসছিল। পুরো বাংলার মানুষ জন বাংলা ভাষাকে তাদের মাতৃভাষা
হিসেবে চাচ্ছিলেন। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী উর্দু ভাষাকে
পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেবে এমনটাই সিদ্ধান্ত নেয়।
এই সিদ্ধান্ত এর কারণে ঢাকা শহর দেশের বিভিন্ন বড় বড় অঞ্চলে অনেক আন্দোলন এবং
মিছিল মিটিং হয়েছিল। যেটিতে পুলিশ বিভিন্ন সময় বাধা প্রদান করে। একসময় পুলিশের
গুলিতে অনেক নিরীহ মানুষজন মারা যায়। যার ফলে বাংলার মানুষ জন আরও বেশি আন্দোলনে
ঝাঁপিয়ে পড়ে। এটির কারণে পাকিস্তান সরকার বাধ্য হয়ে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের
রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
বাঙালির ইতিহাসে এই আন্দোলনকে বলা হয় ভাষা আন্দোলন। এটির মাধ্যমে বাঙালির
জাতীয়তাবাদের জাগরণ হয়েছিল। পরবর্তীতে এটি বাঙালির অনেক আন্দোলন করতে সহযোগিতা
করেছিল। যেমন ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন,১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান,১৯৭০ সালের প্রাদেশিক
নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ।
সবকিছুতেই ভাষা আন্দোলনের প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে মানুষের মধ্যে। ১৯৫২ সালের
ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনে খুবই কার্যকর ভূমিকা
পালন করেছে প্রত্যেকটি আন্দোলনে।
১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের কালোরাত্রি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে বাংলাদেশের জাতির জনক বলা হয়। হাজার বছরের
শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার পুরোটা জীবন বাংলাদেশের
স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে বিলীন করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাতে মুখ্যভাবে সবচেয়ে
যে ব্যক্তিটির অবদান বেশি তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান বাংলাদেশ ফিরে আসেন। ফিরে এসে তিনি সরকার গঠনের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
তিনি সরকার গঠন করেন এবং সংবিধান প্রণয়ন করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন
সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জন্য এত কিছু করার পরেও। এদেশে তার অনেক
শত্রু ছিল যারা তাকে এত বড় পর্যায়ে দেখতে চাইতো না। যার কারণে ১৯৭৫ সালের ১৫ ই
আগস্ট রাতে কিছু রাজাকার ও আল বদররা মিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুরো
পরিবারকে গুলশানের ৩৬ নম্বর বাড়িতে নির্মমভাবে হত্যা করে।
যারা এই পরিকল্পনাটি করেছিল তাদের মধ্যে খন্দকার মোস্তাক অন্যতম ছিলেন। পরবর্তী
সময়ে বাংলাদেশ সরকার এদের কাউকেই ছাড় দেননি। যারা বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যার
পিছনে ছিল। প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ সরকার। এজন্য ১৫ আগস্ট
কে আমরা জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে থাকি। এই রাতটি বাংলাদেশের ইতিহাসের
সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি রাত।
বাংলাদেশের স্বাধীনতায় মুক্তিবাহিনীর ভূমিকা
বাংলাদেশের স্বাধীনতাতে বিভিন্ন ধরনের আঞ্চলিক অনেক সংগঠনের ভূমিকা রয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে একটি সংগঠন হলো মুক্তিবাহিনী। মুক্তিবাহিনী এটি একটি সংগঠন ছিল।
যেটির দ্বারা প্রায় ১০ লক্ষ মুক্তিবাহিনী মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে অংশগ্রহণ
করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনী সবচেয়ে বেশি কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর এই
অঞ্চলটিতে বেশি যুদ্ধ করেছিল।
যে কারণে এ অঞ্চলটি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ও পাকিস্তান হানাদার বাহিনী থেকে
মুক্ত ছিল। এ অঞ্চলে প্রায় বেশিরভাগ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আশ্রয় কেন্দ্র ধ্বংস
করেছে মুক্তিবাহিনীরা। শুধু মুক্তিবাহিনী নয় মুক্তিযুদ্ধের সময় অঞ্চলভেদে এরকম
অনেক আঞ্চলিক সংগঠন রয়েছে যারা অংশগ্রহণ করেছিল।
তাদের সকলের প্রচেষ্টায় এবং অংশগ্রহণের মাধ্যমে খুব সহজে পাকিস্তান হানাদার
বাহিনীদের হারিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করা হয়েছিল। মুক্তিবাহিনীরা সিলেট অঞ্চলেও
খুবই দৃঢ়তার সাথে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সংগ্রাম পরিচালনা করেছিল। সিলেটের ওই
অঞ্চলটি বাংলাদেশের দখলেই ছিল। তাই বলা যায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে
মুক্তিবাহিনীর ভূমিকা খুবই কার্যকর এবং গুরুত্বপূর্ণ।
যারা সে সময় এ বাহিনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অংশগ্রহণ করেছিল এবং তাদের
জীবন বাংলাদেশের স্বাধীনতা উৎসর্গ করেছে। আমরা তাদেরকে অনেক শ্রদ্ধা এবং সম্মান
জানাই। তারায় আমাদের দেশের আসল সোনার ছেলে।
বাংলাদেশকে স্বাধীন এবং সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা
বাংলাদেশ ১৯৪৭ সালের ব্রিটিশ সরকার যখন ভারত পাকিস্তান ভাগ করে। তখন হোসেন শহীদ
সোহরাওয়ার্দী সহ আরো কয়েকজন ব্রিটিশ সরকারের কাছে আবেদন করেছিল বাংলাদেশকে একটি
আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। তৎকালীন সময়ের কংগ্রেসের
সভাপতি মহাত্মা গান্ধী এবং পাকিস্তানের মুসলিম লীগের সভাপতি ইয়াহিয়া খান এটির
বিরোধিতা করে।
তারা বলে বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ হিসেবেই থাকা উচিত। কেননা পাকিস্তানের
বেশিরভাগ মানুষ মুসলমান তাই তাদের পাকিস্তানি সাথে থাকা উচিত। সেসময় বাঙালি
নেতাদের এ বিষয়ে মাথা না দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন একটি রাষ্ট্র হতে
পারেনি। তবে পাকিস্তান সরকার যখন বাংলাদেশের মানুষের উপর শাসন এবং নিপীড়ন
চালায়।
আরও পড়ুনঃ কাজী নজরুল ইসলামের প্রাথমিক জীবন
তখন বাংলাদেশের মানুষ বিভিন্ন সময় সেটির প্রতিবাদ জানায় আন্দোলনের মাধ্যমে।
দীর্ঘ ২৩ বছর বিভিন্ন পরিক্রমার মাধ্যম দিয়ে এসে ১৯৭১ আসলে ২৬ শে মার্চ থেকে ১৬ই
ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে তাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম
হয়। স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫ বছর হয়ে গেলেও।
বাংলাদেশের মানুষ এখনো তাদের মৌলিক অধিকার গুলো ঠিকভাবে পায় না। পাশাপাশি
বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ হলেও সময়ের সাথে সাথে এদেশের গণতন্ত্র প্রায়
হারিয়ে গিয়েছে। তাই বলা যায় বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভ
করলেও এখন পর্যন্ত মানুষ তাদের গণতন্ত্রের স্বাধীনতা ঠিকভাবে পায়না।
শেষ কথা
আমরা আমাদের উপরে আলোচনায় ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের কালোরাত্রি-বাংলাদেশের
স্বাধীনতায় যেসকল রাষ্ট্র সাহায্য করেছে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভাষা
আন্দোলনের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনাদের যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে।
তাহলে আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করুন। এবং আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে
জানাতে পারেন আপনাদের মতামত।
আপনাদের মন্তব্য কমেন্টেরে মাধ্যমে জানাতে পাড়েন
comment url